26.3 C
Khulna
Friday, May 23, 2025

খুলনার রহিমা নাটকের ‘মাস্টার মাইন্ড’ মরিয়ম মান্নান: পিবিআই

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়ার রহিমা বেগমের নিখোঁজের হোতা তারই মেয়ে মরিয়ম মান্নান
এতে সহযোগিতা করে বোন আদুরী আক্তার এবং মা রহিমা খাতুন। অপহরণ মামলার বাদী আদুরী আক্তার ও সাজানো ঘটনার হোতা মরিয়ম মান্নান এবং মা রহিমা খাতুনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান পিবিআই কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

মা হারানো সন্তানের আর্তনাদ, পোশাক দেখে মায়ের মরদেহ শনাক্ত ও পরবর্তী সময়ে জীবিত মা উদ্ধারের ঘটনায় রহিমা বেগমের অপহরণের নাটকটি সামনে আসে। একজন নারীর অনেক দিনের লাশকে মরিয়ম মান্নান তার নিজের মায়ের লাশ বলে শনাক্ত করার ঘটনা দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে। মরিয়ম মান্নান আগে থেকেই দাবি করে আসছিলেন, তার মাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে অপহরণ নাটক সাজানোর জন্য মা ও দুই মেয়ে মোট তিন জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।’

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মরিয়ম মান্নানের মাকে কেউ অপহরণ করেনি। বরং পরিকল্পিতভাবে তিনি আত্মগোপনে গিয়েছিলেন। আর এই পরিকল্পনার হোতা ছিলেন তিনি (মরিয়ম)। ঘটনার দিন মাকে আত্মগোপনে যাওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে টাকাও পাঠিয়েছিলেন মরিয়ম। রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার ২৫ দিন আগে ঢাকায় মেয়ে মরিয়ম মান্নানের বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানে বসেই তারা এই অপহরণ নাটক সাজায়। ২৭ আগস্ট বিকেলে মরিয়ম মান্নান ঢাকা থেকে বিকাশের মাধ্যমে খুলনায় মাকে এক হাজার টাকা পাঠান। তার মা সেখান থেকে ৯৮০ টাকা ক্যাশ আউট করেন। রাতে আত্মগোপনে যান তিনি। বিকাশের অফিশিয়াল তথ্য তদন্তের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

২৭ আগস্ট রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় মায়ের অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী। পরে মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী আক্তার। ওই মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফের নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের সবাইকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। কিছুদিন কারাগারেও ছিলেন তারা।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে মরিয়ম মান্নানদের জমিসংক্রান্ত ঝামেলা ছিল। এ নিয়ে রহিমা বেগম আদালতে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় প্রতিবেশীরাই জিতে যাচ্ছিলেন। রহিমার জমির অংশ তার মেয়েরা লিখে নিয়েছিলেন। তাই প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে তারা এই চক্রান্ত করেছিলেন।

ব্রিফিংএ বলা হয়, আত্মগোপনে যাওয়ার পরে রহিমা বেগম একপর্যায়ে বান্দরবানে গিয়ে একটি হোটেলে কাজ করেন। পরে ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুর গ্রামে যান। সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হক শেখের কাছে তিনি একটি জন্মনিবন্ধন চেয়েছিলেন। তাও পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।
News Sources:probashirdiganta

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ