‘আমরা ভীত নই, গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি : শহিদুল আলম

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

গাজা অভিমুখে মানবিক সহায়তা বহনকারী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি জাহাজ ‘কনসায়েন্স ফ্লোটিলা’য় রয়েছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, কনসায়েন্স ফ্লোটিলা এখনও ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা থাকা জলসীমায় প্রবেশ করেনি। জাহাজটি ঝড়ের কবলে পড়েছে। সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র জলসীমায় প্রবেশ করলে এটিও আটক করা হবে বলে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

আলোকচিত্রী শহিদুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাতে ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন। সাগর উত্তাল থাকায় সেখানে তাঁকে জাহাজের ডেকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। লাইভে তিনি উত্তাল সাগরের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। তবে গভীর রাতে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আকাশ পরিষ্কার, তবে সমুদ্র উত্তাল’।
এ ছাড়া গতকাল দুপুরে এক ফেসবুক ভিডিও পোস্টে তিনি বলেন, কনসায়েন্স ফ্লোটিলার ডেক থেকে শহিদুল আলম বলছি। এটি ফ্লোটিলার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং শেষ ফ্লোটিলা। গ্রিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঝড়ের সতর্কতা আসছে। গত রাতে আমরা ঝড়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম।

ক্যাপ্টেন গতি বাড়িয়েছিলেন, যাতে আমরা ঝড়ের আগে থাকতে পারি। এখন ঝড় ও বিদ্যুৎ চমকানো বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃষ্টিও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা বাকি ফ্লোটিলা থেকে পিছিয়ে পড়েছি। সামনের দিকে যারা ছিল তাদের ওপর ইতোমধ্যেই আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা এই হুমকিতে ভীত না হয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অবরোধ ভেঙে ফেলব। ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে।

এদিকে গতকাল আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ‘সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করা বা আইনসম্মত নৌ অবরোধ লঙ্ঘন করার চেষ্টা ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

ইসরায়েল বলছে, ‘নৌযানের সব যাত্রী সুস্থ আছেন। তাদের নিরাপদে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে।’ একটি জাহাজ এখনও আটক হয়নি জানিয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘জাহাজটি যদি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করে অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করে, তবে সেটিও আটক করা হবে।’

ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের নৌবাহিনী বুধবার রাতে কয়েকটি যুদ্ধজাহাজে এসে সুমুদ ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌযান আটক করে। বাকিগুলো আজ বৃহস্পতিবার আটক করে তারা। যেসব নৌযান আটক করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সুইডেনের জলবায়ু ও অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ অনেকে রয়েছেন।

রয়টার্স এক ভিডিও প্রতিবদনে জানিয়েছে, সুমুদ ফ্লোটিলার আটক জাহাজগুলো আশদোদ বন্দর পৌঁছেছে। বন্দরটি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। ইসরায়েল জানিয়েছে, আটকদের প্লেনে ইউরোপ পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ফ্লোটিলায় রয়েছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মানবাধিকারকর্মী রুহি লরেন আখতার। তিনি ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড বানানাস’ নামের মানবিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। ফেসবুকে দেওয়া তাঁর সর্বশেষ পোস্টে তিনি লিখেছেন, গতকাল রাতে শুধু খাদ্য, শিশুদের দুধ ও জরুরি সরঞ্জাম বহনকারী সহায়তা জাহাজগুলোকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে এবং অংশগ্রহণকারীদের অপহরণ করেছে। এটি এক ভয়াবহ লঙ্ঘন, কিন্তু এখানেই শেষ নয়। গাজাবাসীর এখনও আমাদের প্রয়োজন।
ns/samakal

  • শেয়ার করুন