প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৫
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিটি উপদেষ্টা এখন নিজের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত। সরকার আজ দেশের মানুষের বিপক্ষে, শিক্ষাব্যবস্থার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে।”
রোববার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
সামান্তা শারমিন বলেন, দেশের ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে এই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। অথচ এখন তারা ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গাড়ি কেনার উদ্যোগ নিচ্ছেন, আর শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা উঠলেই বলেন—সরকারের টাকা নেই।
শিক্ষা কমিশন গঠন না করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে। শেখ হাসিনার আমলে যে পরিকল্পিতভাবে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে, তা রোধ করতে এই কমিশন জরুরি ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সরকার দেশের শিক্ষা খাতকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন। “প্রশিক্ষণ, বেতন-ভাতা—সব জায়গায় চরম অবহেলার শিকার তারা। শিক্ষকদের মাত্র ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়ার মতো বিষয়ও সরকারের কাছে দাবি জানাতে হয়, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক,” যোগ করেন সামান্তা শারমিন।
এদিকে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “রাস্তায় ফেলে শিক্ষক পেটানো কোনো সভ্য রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না। আটককৃত শিক্ষকদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশের শিক্ষকরা তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির নাগরিকের মতো জীবনযাপন করেন, অথচ তাদের কাছ থেকেই রাষ্ট্র প্রথম শ্রেণির নাগরিক প্রত্যাশা করে। মাস শেষে তাদের হাতে মাত্র ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়—এটা রাষ্ট্রের লজ্জা।”
শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানানো এ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশিরসহ অন্যান্য নেতারা।