প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫
গাজায় দখলদার ইসরায়েলকে সহায়তার অভিযোগে প্রকাশ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুরে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে এই দণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম সাফাক।
বার্তাসংস্থা ইয়েনেত জানিয়েছে, চলমান সংঘাতের সময় থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে হামাস।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছেন, গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব অস্থায়ীভাবে হামাসের হাতে দেওয়া হয়েছে। এর পরপরই আটজনকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর প্রকাশ্যে আসে।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশ পরিহিত হামাস যোদ্ধারা আটজন ব্যক্তিকে হাত বাঁধা ও চোখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় নিয়ে আসে। হামাসের দাবি, এরা গত দুই বছরের যুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
অন্যদিকে গাজার অভ্যন্তরে হামাসের সঙ্গে দোঘমুস গোষ্ঠীর সংঘর্ষ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইয়েনেতের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোঘমুস গোষ্ঠীর ৫২ সদস্যকে হত্যা করেছে হামাস যোদ্ধারা, অপরদিকে হামাসের ১২ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সংগঠনের সিনিয়র নেতা বাসিম নাঈমের ছেলেও রয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামাসের যোদ্ধারা অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে দোঘমুস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে এবং সেখানে প্রবল গোলাগুলি শুরু হয়।
দোঘমুস গোষ্ঠী গাজার অন্যতম শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন, যারা অতীতে হামাসের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে। ইসরায়েলও স্বীকার করেছে, হামাসবিরোধী কিছু গোষ্ঠীকে তারা সীমিত পরিমাণে অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
গাজা থেকে বিবিসি সাংবাদিক রুশদী আবুলউফ জানিয়েছেন, প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে একদিকে ভীতি, অন্যদিকে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও, এখন অভ্যন্তরীণ সংঘাত নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হামাসের দাবি, তারা গাজার ‘নিরাপত্তা পুনর্বহাল’ এবং ‘বিচারহীনতা দূর’ করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে অনেকে মনে করছেন, হামাস আসলে তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছে।
সূত্র: সাফাক, ইয়েনেত, বিবিসি