খুলনা ।। ১৮ আগস্ট
যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক রুবেল আনছারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, একান্ত সাক্ষাতের চাপ এবং গাড়িতে ভ্রমণের প্রস্তাবের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। অভিযোগপত্রে তিনি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছেন এবং কথোপকথনের স্ক্রিনশটও জমা দিয়েছেন।ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, সম্প্রতি অধ্যাপক রুবেল আনছারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে যা দেখে আমার সঙ্গের ঘটনার মিল খুঁজে পাই। আমাকে প্রতিনিয়ত মেসেজ দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেন তিনি। এ ছাড়াও স্যারের গাড়িতে উঠাতে চেয়েছেন, যা অজুহাত দিয়ে এড়িয়ে গিয়েছি আমি। উনি আমার বাবার বয়সী একজন মানুষ, তারপরও এভাবে কথা বলেন কীভাবে! তিনি বলতেন, ‘মেয়েরা শাড়ি পরে আসলেই ফুল মার্কস, যা ক্লাসের সবাই জানে।’
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে প্রফেসর রুবেল আনছার বলেন, আমি এই মেয়েকে চিনি না। কখন কোন প্রসঙ্গে কথা হয়েছে সে বিষয় মনে নেই।ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমার মেয়ে এই ঘটনা বলার পরে থেকে মানতে পারছি না বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে পড়ালেখা করতে গেছে, শিক্ষকদের কাছে, তারাই যদি এমন আচরণ করে তাহলে মেয়েরা কোথায় যাবে। এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সেজন্য আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।এ বিষয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমাদের কেন্দ্রের ৭ সদস্যের কমিটি এটা নিয়ে কাজ করবে। আমরা শিগগিরই আরেকটি মিটিং কল করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত বলেন, আরেকটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত যেহেতু চলছে এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তদন্তে কেমন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে বলেন, তদন্তে কেমন সময় সময় লাগতে পারে তা নির্দিষ্ট করে তো বলা সম্ভব না। তবে আইন অনুযায়ী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হয়, সেভাবেই হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রশ্ন, অশালীন প্রস্তাব, একান্ত সাক্ষাতের চাপ ও যৌন সম্পর্কের ইঙ্গিতের অভিযোগ করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সেই প্রেক্ষিতে বুধবার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে ওই শিক্ষককে সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছে।