24.6 C
Khulna
Thursday, August 21, 2025

আদালতে আসামির স্বীকারোক্তি—১০ লাখ টাকা লোন দেয়নি বলে ব্যাংকে চুরির সিদ্ধান্ত নিই

আমি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ঋণ পরিশোধের জন্য রূপসায় কৃষি ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা লোনের জন্য আবেদন করি। কিন্তু ম্যানেজার লোন না দেওয়ায় ব্যাংকে চুরি করার সিদ্ধান্ত নিই।’

আজ সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন খুলনার রূপসা উপজেলায় কৃষি ব্যাংকের শাখায় চুরি মামলার আসামি ইউনূস শেখ। বিকেলে ইউনূসকে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনন্যা রায়ের আদালতে (রূপসা আমলি আদালত) হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফইউনূস রূপসা উপজেলার নিকলাপুরের বাসিন্দা। ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৯৬ টাকা লুটের মামলায় গতকাল রোববার ভোররাতে তাঁকে ব্যাংক ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে চুরির ১ লাখ ৫২ হাজার ৯৬০ টাকা জব্দ করা হয়।

পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় লেদমিস্ত্রি। তিনি ওই ব্যাংক ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। এ ছাড়া একই ভবনের নিচতলায় তাঁর ওয়ার্কশপ রয়েছে। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ব্যাংকের তালা ও ভল্ট ভেঙে চুরি করতে সক্ষম হন।ইউনূসের জবানবন্দির বরাতে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে ব্যাংকে নিরাপত্তাকর্মী না থাকার সুযোগটি কাজে লাগান ইউনূস। তিনি লোহা কাটার মেশিন দিয়ে ছয়টি তালা কেটে ভেতরে ঢোকেন। পরে ভল্ট কেটে ৫, ১০ ও ২০ টাকার খুচরা নোট চুরি করে নিয়ে বিছানার তোশকের নিচে রাখেন। এরপর দুপুরে ফের ব্যাংকে গিয়ে ৫০০ ও ১০০০ টাকার বড় নোটগুলো নিয়ে ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফাঁকা জায়গায় রেখে দেন। পরে গিয়ে সেখানে ওই টাকাগুলো আর পাওয়া যায়নি। খুচরা টাকা দিয়ে তিনি কিছু দেনা পরিশোধ করেন। অন্যগুলো থেকে পুলিশ পরে প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জব্দ করে। ওসি জানান, অবশিষ্ট লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘এ’ সার্কেল) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ইউনূসকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যে উল্লিখিত টাকা উদ্ধার করেছে। তবে এখন পর্যন্ত সব টাকা উদ্ধার করা যায়নি। বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ চুরির ঘটনা ইউনূস একাই ঘটিয়েছেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তিনজনের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ না থাকায় তাঁদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ