গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে দুই দিনে পদত্যাগ করলেন মোট ১৪ জন স্থানীয় নেতা। এর মধ্যে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে মুকসুদপুর উপজেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একসঙ্গে আরো ছয় নেতা পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগকারী ছয় নেতা হলেন মুকসুদপুর পৌর আওয়ামী লীগের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর মো. নিয়ামত খান, ২ নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জামাল হোসেন মুন্সী, ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি পরিমল সাহা ও সাধারণ সম্পাদক শান্ত সাহা, ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ নেতা জয়ন্ত সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিয়ামত খান বলেন, শুক্রবার (২২ আগস্ট) থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না।তবে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আমরা সব সময় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব। রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাব।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে ননীক্ষীর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮ নেতা এক সংবাদ সম্মেলনে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ননীক্ষীর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংবাদ সম্মেলনে তাদের পদত্যাগপত্র উপস্থাপন করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনোজ মৌলিক।ওই দিন পদত্যাগকারী নেতারা হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সহ-প্রচার সম্পাদক রাসেল শেখ, সদস্য স্বপন শেখ, ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুর আলম মিয়া, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুবল রায়, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আক্কাস চোকদার এবং ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জলিল কাজী।
তারা জানান, স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং খুব দ্রুত পদত্যাগপত্র উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে পাঠানো হবে।
তবে নাম প্রকাশ না করার সর্তে মুকসুদপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা জানান, এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনায় বহু মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ১৮ হাজার মানুষকে নামে-েবেনামে আসামি করা হয়েছে।এসব মামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্য দল থেকে পদত্যাগ করছে। এটা তো পদত্যাগের সাংগঠনিক কোনো প্রক্রিয়া নয়।
এ বিষয়ে মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক হায়দার হোসেন বলেন, ‘পদত্যাগের নিয়ম হলো ওয়ার্ড কমিটির নেতা ইউনিয়ন কমিটির কাছে পদত্যাগ করবেন, ইউনিয়ন কমিটির নেতা উপজেলা কমিটির কাছে পদত্যাগ করবেন। শুধু সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ ঘোষণা দিলে তা কার্যকর হয় না। যারা পদত্যাগ করেছেন, তারা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন।তারা দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা নন। তাদের মতো আরো দুই শত নেতা পদত্যাগ করলেও মুকসুদপুর আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি হবে না।’