26.6 C
Khulna
Monday, July 7, 2025

ছেলের গলায় ছুরি ধরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৪

পঞ্চগড়ে সন্তানের গলায় ছুরি ধরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ৪
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় দুই বছর বয়সী শিশুসন্তানের গলায় ছুরি ধরে এক গৃহবধূকে (২৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় একটি চা বাগানের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই গৃহবধূ এবং তার দুই বছরের ছেলেকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এই ঘটনায় শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এর আগেই, শনিবার সকালে পুলিশ জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
মামলার এজাহার এবং ভুক্তভোগীর ভাষ্য অনুযায়ী, ওই গৃহবধূ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জুটমিল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শুক্রবার রাতে তিনি তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ইজিবাইকে করে পঞ্চগড় সদরে বাবার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে অন্য একটি ইজিবাইকের চালক, যিনি তার পূর্বপরিচিত, তাকে নাম ধরে ডাকেন। ইজিবাইক থামালে জনিসহ ছয়জন তাকে জোর করে পাশের একটি চা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তার সন্তানের গলায় ছুরি ধরে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অভিযুক্তরা তাকে সড়কের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
রাত আনুমানিক একটার দিকে সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং দেড়টার দিকে ছেলেসহ পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, “ওরা আমার ছোট্ট ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল। আমি তখন নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে গেলে ভয় দেখায়। এরপর একে একে ছয়জন আমাকে ধর্ষণ করে, যাদের মধ্যে চারজন পরিচিত এবং দুজন অপরিচিত।” তিনি আরও বলেন, “আমি ধর্ষণের শিকার হলাম, আর এখন আমার কাছের লোকেরাই আপোসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবুল কাশেম জানান, “রাতে পুলিশ একজন নারীকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, যা পরীক্ষার পর জানা যাবে।”
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, “জ্ঞান ফেরার পর ওই নারী ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ