25 C
Khulna
Saturday, August 23, 2025

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ৭০০ গাছ কেটে নিল কারা জানে না প্রশাসন

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) জন্য অধিগ্রহণ করা ২০৫ বিঘা জমিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আম, জাম, মেহগনিসহ বিভিন্ন ধরনের ৭০০ গাছ দরপত্র ছাড়াই কেটে নেওয়া হয়েছে। গাছগুলো কে কেটেছে, তা জানে না কেউ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় বালু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেই দায় সেরেছে।

অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাধু কিছু কর্মকর্তা ও বালু ভরাট কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে জড়িত।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে এখানে রয়েছে সাত হাজার ৩০০ গাছ। এর মধ্যে রামেবির উন্নয়নকাজ করার জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ কেটে ফেলার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো বিক্রির জন্য চিহ্নিত করা হলেও কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি।

বেশ কিছুদিন ধরেই গাছগুলো গোড়া থেকে কেটে নেওয়া হয়। কয়েক মাস ধরেই প্রকল্প এলাকায় বালু ভরাটসহ প্রধান ফটক নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ করছেন কয়েকজন ঠিকাদার।

এর মধ্যে রামেবি প্রকল্পের অধিগ্রহণ করা জমির ভেতরের কিছু অংশে ভেড়ার খামার করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজুর হাজি।

গত বৃহস্পতিবার রামেবির প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত গাছ গোড়া থেকে কেটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। অনেক গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টিতে প্রকল্প এলাকায় হাঁটুপানি জমে থাকায় পুরো এলাকায় প্রবেশ করা যায়নি।

স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, ট্রলিতে করে বেশ কিছুদিন ধরে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে কারা কাটছে, তা তারা জানেন না। তারা ধারণা করেছিলেন গাছগুলো ঠিকাদাররা কিনে নিয়েছেন।গাছ কাটার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের কাছে জানতে চাচ্ছেন– গাছ কে কাটতে বলেছে? তখন শ্রমিকরা বলছেন, ‘হাফিজুর হাজি গাছ কাটতে বলেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাফিজুর হাজি বলেন, সেখানে আমার ভেড়া খামার ছিল। কিছুদিন আগেই সে জায়গা ছেড়ে চলে এসেছি। আমি কোনো গাছ কাটিনি। কে কেটেছে, তা জানি না। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন কে কাটল?

শহিদুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক জানান, কয়েকদিন ধরে ট্রলিতে করে কাটা গাছ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কে কাটছে, তা তারা জানেন না।

অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাধু কিছু কর্মকর্তা, বালু ভরাট কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসাইন কন্সট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং হাফিজুর হাজি মিলেমিশে এসব গাছ কেটে বিক্রি করেছেন।

শ্রমিকরা জানান, গত মৌসুমে নামমাত্র মূল্যে পুরো প্রকল্প এলাকার জমির আম বিক্রি করে কয়েক কর্মকর্তার পকেটে ভরা হয়েছে।

এ বিষয়ে রামেবি প্রকল্পের উপপরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর বলেন, গাছ কাটার অনুমতি কাউকেই দেওয়া হয়নি। চুরি করে প্রায় ৭০০ গাছ কাটা হয়েছে। এ ঘটনায় বালু ভরাট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসাইন কন্সট্রাকশন লিমিটেডকে শোকজ করে জবাব চাওয়া হয়েছে।

হোসাইন কনস্ট্রাকশনের রাজশাহীর ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা শুধু বালু সরবরাহ করছি। কোনো গাছ কাটায় আমরা জড়িত নই। শোকজের জবাব দিয়েছি।

উপাচার্য প্রফেসর ডা. জাওয়াদুল হক বলেন, উন্নয়নকাজের জন্য কিছু গাছ কাটা পড়বে। সেটা টেন্ডারের মাধ্যমে করা হবে। আমরা এখনও গাছ কাটার কোনো টেন্ডার করিনি। এতগুলো গাছ চুরি করে কারা কীভাবে কাটল তা দেখা হচ্ছে। যারাই জড়িত থাকবে– কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র সমকাল

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ