খুলনা, ২৮ জুন ২০২৫ | প্রতিদিন খুলনা
খুলনার কৈয়া বাজার এলাকায় নির্মমভাবে নিহত বাবলু দত্ত হত্যাকাণ্ডের রহস্য মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উদঘাটন করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ধারালো চাপাতি, দুটি মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
কেএমপি সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন ২০২৫ তারিখে নিহত বাবলু দত্তের ছেলে দিপু দত্ত খুলনার হরিণটানা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ২৬ জুন সকাল ৯টার দিকে তিনি ও তার বাবা কৈয়া বাজারের জেলের মোড়ে তাদের নিজস্ব দোকানে যান। সেখান থেকে তার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজে কুলটি এলাকায় যান এবং রাত ৮টার দিকে দোকানে ফিরে আসেন। এরপর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তিনি আবার মোটরসাইকেল নিয়ে দোকান থেকে বের হন। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশী বৃত্তান্ত দিপুকে ফোন করে জানান, দেবাশীষের মেহগুনী বাগানের পাশে একটি মোটরসাইকেল দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে আছে, যা তার বাবার বলে ধারণা করা হয়। দিপু ও তার মামা সুমন শেখ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশে দেখতে পান। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাগানের ২০-২৫ গজ ভিতরে তার বাবার গলা কাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হরিণটানা থানা পুলিশ কৈয়াবাজার ও ফুলতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এবং দুইজন সন্দেহভাজন—সুমন শেখ (৪৫) ও মুক্তি মোল্যা (৫৩)—কে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বাবলু দত্তকে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করে।
তাদের দেখানো মতে রাজবাধ দক্ষিণপাড়ার অরুন বাবু ও প্রদীপ বাবুর প্লটের পাশের খাল থেকে দুটি ধারালো চাপাতি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তাদের হেফাজত থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
থানা রেকর্ড পর্যালোচনায় জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামি সুমন শেখের বিরুদ্ধে পূর্বে দুটি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত কোনো মামলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি এই হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তাও তদন্তাধীন রয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সব কুচক্রী মহলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।