Home সারাবিশ্ব ফিলিস্তিন স্বীকৃতির জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন মাখোঁ

ফিলিস্তিন স্বীকৃতির জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন মাখোঁ

0

৫ জুলাই ২০২৫ ।। প্রতিদিন খুলনা

সারাবিশ্ব: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ যুক্তরাজ্যের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারকে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জোরালোভাবে চাপ দিচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডনে যাচ্ছেন মাখোঁ, যেখানে এই ইস্যুটি হবে আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।

সফরকালে মাখোঁ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে ভাষণ দেবেন এবং স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে থাকবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যে আসা ছোট নৌকাভিত্তিক অভিবাসন রোধে ‘ওয়ান-ইন, ওয়ান-আউট’ নীতির আলোকে একটি নতুন চুক্তি। এছাড়া যৌথ পারমাণবিক প্রকল্প ও ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের পরিকল্পনাও আলোচনায় আসবে।

তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর পাশাপাশি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্ন। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, এ বিষয়ে ডাউনিং স্ট্রিট ও এলিসি প্রাসাদের মধ্যে সময় ও কৌশল নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও উভয় পক্ষই বলছে, ‘যথাসময়ে’ এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে, বাস্তবে কবে ও কীভাবে তা হবে—তা নিয়ে স্পষ্ট ভিন্নমত রয়েছে।

টেলিগ্রাফের তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট মাখোঁ চান, স্বীকৃতির প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হোক। তিনি এর আগে সৌদি আরবের সঙ্গে মিলে জাতিসংঘে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্যোগও নিয়েছিলেন, যা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে বাতিল হয়ে যায়। ফ্রান্সের মতে, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলে তা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি প্রক্রিয়াকে বেগবান করতে পারে।

তবে ব্রিটিশ সরকারের কিছু কর্মকর্তার মতে, এই স্বীকৃতি যদি প্রতীকী মাত্র হয় এবং হামাসকে কোনো রাজনৈতিক শর্ত না দেওয়া হয়, তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে না। তারা মনে করছেন, স্বীকৃতির পূর্বশর্ত হিসেবে হামাসকে অস্ত্র পরিত্যাগ ও শাসন থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা এমন একটি দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে বিশ্বাস করি, যা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয় জাতির নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি তখনই দেওয়া হবে, যখন তা শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”

অন্যদিকে, ইসরায়েল এই প্রস্তাবিত একতরফা স্বীকৃতির তীব্র বিরোধিতা করছে। তাদের মতে, এটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর হামাসকে এক ধরনের পুরস্কার দেওয়ার সামিল হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, মাখোঁ ও স্টারমারের মধ্যে গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হবে, তবে এর ফলাফল এখনো অনিশ্চিত।

এদিকে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরেও বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হয়ে উঠছে। গুঞ্জন রয়েছে, সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে একটি নতুন বামপন্থি রাজনৈতিক দল গঠিত হতে পারে, যাদের ফিলিস্তিনপন্থি অবস্থান স্টারমারের তুলনায় আরও জোরালো হবে। ফলে মাখোঁর চাপ ব্রিটিশ সরকারের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপও বাড়িয়ে তুলছে।

Exit mobile version