26.1 C
Khulna
Monday, July 7, 2025

আফগানদের ইরান ছাড়ার শেষ দিন আজ, কাল থেকে গ্রেপ্তার

ইরানে বসবাসরত লাখো আফগান শরণার্থী ও অভিবাসীকে দেশ ছাড়ার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। আজ রোববার (৬ জুলাই) স্বেচ্ছায় ইরান ত্যাগের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার শেষ দিন। এরপর থেকে অবৈধভাবে অবস্থানকারী আফগানদের আটক করে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর আল জাজিরার।

এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘর্ষ এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলার পর, দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

ইরান সরকার চলতি বছরের মার্চে একটি নির্দেশনা জারি করে, যেখানে জানানো হয়—যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ইরানে অবস্থান করছে, তাদের ৬ জুলাইয়ের মধ্যে স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে হবে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের আশঙ্কা, এই গণপ্রত্যাবাসনের ফলে আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতা আরও বাড়তে পারে। বহু আফগান শরণার্থী যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও তালেবান শাসনের ভয় থেকে পালিয়ে ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন এবং অনেকে সেখানেই জন্মেছেন ও বড় হয়েছেন।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ২০২৩ সালে ইরান অবৈধ অভিবাসীদের দেশত্যাগে বাধ্য করতে একটি অভিযান শুরু করে। চলতি বছরের মার্চে সময়সীমা ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ আফগান ইরান ছেড়েছেন, যার মধ্যে জুন মাসেই ফিরেছেন প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার।

বর্তমানে ইরানে আনুমানিক ৪০ লাখ আফগান অভিবাসী ও শরণার্থী রয়েছে। তাদের অনেকের জীবনের মূল ভিত্তি গড়ে উঠেছে সেখানেই।

তেহরানে বসবাসকারী এক আফগান রেস্তোরাঁ মালিক, বতৌল আকবরি আল জাজিরাকে বলেন, “ইরানে এখন স্পষ্টভাবে ‘অ্যান্টি-আফগান’ মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক, কারণ এটাই আমাদের একমাত্র পরিচিত ঘর।”

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের সময় প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগের গড় ছিল দিনে মাত্র ২ হাজার।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, “আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম, তবে জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে।”

তেহরান থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক রেসুল সেরদার জানান, দেশটির অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি ও সামাজিক চাপে আফগানদের দায়ী করা হচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর এসব অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক ভাষণে বলা হচ্ছে, আফগানদের কেউ কেউ ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত—যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ