Home আঞ্চলিক সংবাদ খুবির ২ বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীর চাঁদা দাবির অভিযোগ, অডিও ফাঁস

খুবির ২ বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীর চাঁদা দাবির অভিযোগ, অডিও ফাঁস

0

খুলনায় একটি মেলার আয়োজকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগর’-এর সদস্য সচিব জহুরুল ইসলাম তানভীর এবং মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ। রোববার (৬ জুলাই) রাতে চাঁদা দাবির একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ফাঁস হওয়া ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ফোন রেকর্ডে মেলার আয়োজক মন্টুর কাছে চাঁদা দাবি করতে শোনা যায় সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদকে। সেখানে তিনি বলেন, “আমি পারব সবাইকে ঠাণ্ডা করতে A to Z, কেউ ওইদিকে ঘুরেও তাকাবে না—যদি ১০ টাকা দেন (১০ লাখ)। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এক গ্রুপ যাবে, কাল আরেক গ্রুপ যাবে—আপনি কয়জনকে ঠাণ্ডা করবেন?”

উত্তরে মন্টু বলেন, “আমার দ্বারা তো সবাইকে ঠাণ্ডা করা সম্ভব না।” আজাদ তখন বলেন, “আপনার পুলিশ কমিশনারও ঠাণ্ডা করতে পারবে না, বলে দিয়েন তারে।” মন্টু আরও বলেন, “আমার হাতে দুই টাকা (লাখ) রেডি আছে, বললে এখনই দিয়ে যাব। প্রতি গ্রুপে তো দিতে পারব না ভাই।”

মন্টু পরে সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন, “ফাঁস হওয়া রেকর্ড আমার এবং সাজ্জাদের ফোনালাপ, যা ১০০% সত্য।”

অডিওটি ফাঁসের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরিয়াক কবির বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে অরাজনৈতিক ঘোষণার পরও কিছু তথাকথিত সমন্বয়ক নিজেদের পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।”

তিনি আরও জানান, ৫ আগস্টের পর হঠাৎ তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। তারা দামি বাইকে চলাফেরা করছে। আজাদ নিজেকে ‘জুলাই আন্দোলনের কান্ডারি’ দাবি করলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের রক্ষার চেষ্টাও প্রশ্নবিদ্ধ। ‘জুলাই চেতনা’ ব্যবহার করে তারা মূলত নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে বলে অভিযোগ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার বলেন, “আমি অডিওটি দেখেছি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইনামুল হাসান জানান, “নবপর্যায়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি আর্থিক স্বচ্ছতা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযোগ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ ও জহুরুল ইসলাম তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন, “আমি বর্তমানে ফরেস্টিতে আছি, সারাদিন নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি এখনো দেখিনি। ৮ বা ৯ তারিখে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত জানাতে পারব।”

ঘটনার তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী মহল। এই ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠনগুলোর দায়বদ্ধতা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা চলছে।

Exit mobile version