খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব হত্যাকাণ্ড: তথ্যদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার প্রতিবেশী যুবক সজল
খুলনার দৌলতপুর থানার পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকায় যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সজল (২৭) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার (১২ জুলাই) গভীর রাতে, আনুমানিক সোয়া ২টার দিকে, দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সজল একই এলাকার বাসিন্দা সাহেব আলীর ছেলে। স্থানীয়ভাবে তিনি একটি মুদি দোকান পরিচালনা করতেন। তার দীর্ঘদিনের পরিচিত ছিলেন নিহত মাহবুবের পরিবারের সঙ্গেও।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, “সজল সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নেয়নি, তবে সে হত্যাকাণ্ডে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, সে মাহবুবের চলাফেরা ও অবস্থান সংক্রান্ত গোপন তথ্য খুনিদের কাছে সরবরাহ করেছে। তার তথ্যের ভিত্তিতেই দুর্বৃত্তরা পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহবুবকে গুলি করে এবং পায়ের রগ কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে।”
ওসি আরও বলেন, “সজলের কাছ থেকে আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।”
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) তাজুল ইসলাম বলেন, “সজল হত্যাকাণ্ডে সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করেছে, এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। শুধু এই হত্যাকাণ্ড নয়, সজলের বিরুদ্ধে গোপন সংগঠনের তথ্য সরবরাহের অভিযোগও রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময় সে দুর্বৃত্তদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করে, খবর আদান-প্রদান করেছে। আমরা তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেব। রিমান্ডে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী, যা মূল খুনিদের গ্রেপ্তারে সহায়ক হবে।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকার নিজ বাড়ির সামনে প্রাইভেটকার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুবুর রহমান মোল্লা। এ সময় তিনজন দুর্বৃত্ত একটি মোটরসাইকেলে এসে তার ওপর অতর্কিতে গুলি চালায়। মাহবুবের শরীরে নয়টি গুলি লাগে। শুধু তাই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করতে দুর্বৃত্তরা তার দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত মাহবুব দৌলতপুর থানা যুবদলের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ছিলেন। হত্যার পরদিন তার বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলাটি দৌলতপুর থানায় ১২ নম্বর হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।
পুলিশ বলছে, সজলকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও পেছনের মূল পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।