ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার বাঁশপদুয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে তিন বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হন।
নিহতরা হলেন বাঁশপদুয়া এলাকার মো. ইউসুফের ছেলে মিল্লাত হোসেন (২১) এবং গাছি মিয়ার ছেলে মো. লিটন (৩২)। আহত হয়েছেন মো. আফসার (৩২)।
ফেনী ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশাররফ হোসেন জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২১৬৪/৩-এস সীমান্ত পিলারসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিএসএফের গুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে মিল্লাত ও আফসার মাছ ধরতে সীমান্তের কাছাকাছি যান। এ সময় বিএসএফ গুলি চালালে তারা আহত হন। স্থানীয়রা প্রথমে তাদের পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে গুরুতর অবস্থায় ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে মিল্লাতের মৃত্যু হয়।
অপরদিকে মো. লিটনকে ভারতের অভ্যন্তরে আহত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরে তাকে বিলোনিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিজিবি জানিয়েছে, তার মরদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
আহত আফসারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত মিল্লাতের মামা মোহাম্মদ ডালিম জানান, তারা রাতে মাছ শিকার করতে গিয়েছিলেন। এ সময় কোনো সতর্কতা ছাড়াই বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
বিএসএফের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের চোরাকারবারিরা মাল পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিল। তাদের সতর্ক করা হলে তারা বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করে, ফলে আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়া হয়। ওই স্থান থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাচালান পণ্যের চালানও জব্দ করা হয়েছে বলে বিএসএফ জানিয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ বিষয়ে তদন্ত ও তথ্য সংগ্রহ চলছে। বিজিবি জানায়, রাতের অন্ধকারে তারা কেন সীমান্ত অতিক্রম করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদলিপি পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছে। বিজিবি বলছে, সীমান্তে কোনো অবস্থাতেই এমন ফায়ারিং কাম্য নয়।
