রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত চার নেতার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান রিমান্ড শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদাব এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ। গ্রেপ্তারের পর তাদের উভয় সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন বলেন, “আসামিরা এনসিপি (ন্যাশনাল চিলড্রেন পার্টি) নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে। তারা বিএনপিকে জড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং চাঁদাবাজির দায় বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।”
রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, “এদের অতীতে খাওয়ারও সামর্থ্য ছিল না, এখন পাজেরো গাড়িতে ঘোরে। মূল হোতাদের ধরতে হলে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।”
আদালতে আসামিদের তোলার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। তারা ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে’ স্লোগান দেন এবং “জুলাই ব্যবসার দিন শেষ” বলেও স্লোগান তোলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এজাহার অনুযায়ী, গত ১৭ জুলাই আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন।
তাদের হুমকির মুখে ভয়ে ওইদিন ১০ লাখ টাকা দেন বাদীপক্ষ। পরে ১৯ জুলাই আবার ৪০ লাখ টাকা দাবিতে হুমকি দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২৬ জুলাই তারা আবার স্বর্ণালঙ্কার নিতে বাসায় এলে পুলিশ খবর পেয়ে অভিযান চালায়। রিয়াদসহ চারজনকে আটক করা হয়, তবে কাজী গৌরব অপু পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর ছয়জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।