নরসিংদীর চাঁদাবাজদের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামীম আনোয়ার। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি চাঁদাবাজদের কড়া বার্তা দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন:
> “প্রিয় চাঁদা-ভাইয়েরা,
নরসিংদীতে আপনারা যারা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করতেন, তাদের দুইজনকে হাতেনাতে ধরার পর বুঝতে পারছি—আপনাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমাকে থামাতে নানা কৌশল নেওয়া হচ্ছে—কখনো লোভ দেখানো, কখনো আবার হুমকি। অনেকে হয়তো ভাবছেন, পুলিশ অফিসারেরা এসব বলে, পরে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেই চুপ করে যায়। কিন্তু জেনে রাখুন, আমি সে দলের না।
আমার চাকরি জীবনের ইতিহাস একটু দেখুন।
নরসিংদীতে গত ৮-৯ মাস ধরে কাজ করছি। ওসি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতি—সবাইকে জিজ্ঞেস করুন, কেউ কি আমাকে এক কাপ চাও খাওয়াতে পেরেছেন? আমি কথা দিচ্ছি, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে আমি অবৈধভাবে এক পয়সাও নিয়েছি, আমি চাকরি ছেড়ে দিনমজুর হয়ে জীবন কাটাব। টাকা দিয়ে আমাকে কেনার মতো সন্তান এখনও কোনো মায়ের গর্ভে জন্মায়নি—এটা আমি গর্ব করে বলি।
ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজ হবে না।
আপনারা যারা মনে করেন, ভবিষ্যতে আমাকে দেখে নেবেন, ভয় দেখাবেন—তাদের বলছি, আমাকে এখনো চিনতে পারেননি। আমি চাকরির মায়ায় কাজ করি না। আজ যদি চাকরি ছাড়তে হয়, তবুও আমার কোনো অনুশোচনা থাকবে না। আমার রিজিকের মালিক আল্লাহ। আর সেই বিশ্বাসেই আমি আপনাদের মতো ‘মহাপরাক্রমশালী’দের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে পারি।
সতর্কবার্তা:
আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা দাবি করলে, জেনে রাখবেন সেই টাকা প্রতারকের পকেটে যাবে। পরে যেন কেউ না বলেন—“আপনার জন্য অমুককে টাকা দিয়েছিলাম, আর আপনি তাকে ধরলেন কেন?”
শেষ কথা:
আমি আবারও বলছি—সংশোধন হন। নইলে আমি, একজন সাধারণ পুলিশ অফিসার হয়েও আপনাদের শক্ত প্রতিপক্ষ হব। মনে রাখবেন, এটা শুধু শুরু। পরের পদক্ষেপ হবে আরও কঠোর।
ইনশাআল্লাহ, নরসিংদীর ডিকশনারি থেকে ‘চাঁদাবাজি’ শব্দটা চিরতরে মুছে ফেলা হবে।
যা একসময় শুধু ভাবনায় ছিল, এবার সেটা বাস্তব হবে—এই নরসিংদী থেকেই।”