31.6 C
Khulna
Wednesday, August 6, 2025

নৌকার মতো ভাসছিল গাড়ি, চালককে বললেও লক খোলেনি: ওমান প্রবাসী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দীনের পরিবারের সাতজন মারা গেছেন। গাড়ি ডুবে যাওয়ার আগের অবস্থা বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গাড়ি খাদে পড়ে ডুবে যায়নি। নৌকার মতো ভাসছিল। আমি বারবার ড্রাইভারকে বলছিলাম, লক খুলতে। তবু সে খোলেনি।প্রবাসী বাহার উদ্দীন বলেন, ‘ড্রাইভারকে বারবার বলেছি, লক খুলতে। লক খুলে দিলে সবাই সাঁতার কেটে বের হয়ে যাবে। গাড়ি জাহান্নামে যাক, তুই আগে লক খোল। পরে সে আস্তে করে জানালা দিয়ে বের হয়ে গেছে। পরে আমরা জানালা ভেঙে কয়েকজন বের হয়েছি। বাকি সবাই মারা গেছে।’তিনি বলেন, ‘যদি লক খুলতো তাহলে সবাই বেঁচে যেতো।’

বাহার উদ্দীন আক্ষেপ করে তার পরিবারের লোকদের সম্পর্কে বলেন, ‘আমি এদের সবাইকে নিষেধ করেছিলাম। এরা অল্পবয়সি, এরা যাতে না আসে। বলেছিলাম, আমি তো সকাল সকাল চলে যাব। এরা শোনেনি।’

ওমান প্রবাসী তিনবছর পর দেশে ফিরছিলেন। তাকে স্বাগত জানাতে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকা গিয়েছিলেন তার পরিবারের লোকজন। কিন্তু ফেরত আসার সময় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মাইক্রোবাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে গেলে ৭ জন নিহত হন। বুধবার (৬ আগস্ট) এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত সময় সংবাদকে জানান, লক্ষ্মীপুরের চৌপল্লী গ্রামের বাহার উদ্দিনকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানাধীন পূর্ব চন্দ্রগঞ্জের জগদীশপুরে হাইস মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে ডুবে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও বাকিরা ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান।

নিহতরা হলেন: ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিনের নানী ফয়েজ্জুনেছা (৮০), মা মোরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা বেগম (২৪), ভাবি লাবনী বেগম (৩০), ভাতিজি রেশমি আক্তার (৮), ভাতিজি লামিয়া আক্তার (৯) ও মেয়ে মীম আক্তার (২)।

প্রবাসী বাহার উদ্দীনের বাবা আব্দুর রহীম সময় সংবাদকে বলেন, ‘ড্রাইভার বারবার ঝিমাচ্ছিল। আমরা কয়েকবারই বলেছি, তুমি গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রয়োজনে ঘুমাও। সে বলে যে, না সমস্যা নেই; যাইতে পারব।’তিনি বলেন, ‘যাইতে পারব বলার পর রাস্তায় কয়েকবার এমন হয়েছে যে ঘুমাতে ঘুমাতে আবার ঝটকা দিয়ে সজাগ হতো। চৌমুহনী আসার পরও আমরা বলেছি তুমি দরকার হলে কতক্ষণ ঘুমিয়ে নাও। আমাদের এভাবে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ তোমার চোখে ঘুম বেশি। এভাবে বাংলাবাজার আসার পরও আমরা তাকে ঘুমাতে বলি। এরপর হঠাৎ ঘুম থেকে ঝটকা দিয়ে উঠে সে গাড়ি পাশের খালে ফেলে দেয়।’

আব্দুর রহীম বলেন, ‘গাড়িতে আমি, আমার ছেলে, আমার ছেলের বউ তিন জন, আমার শাশুড়ি, আমার স্ত্রী ও তিন নাতনী। এর মধ্যে আমরা ৪ জন বের হতে পেরেছি। বাকি সবাই মারা গেছে।’সূত্র: সময় টিভি

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ