পিরোজপুর-১ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, শহীদ আল্লামা সাঈদীর ছেলে ও সাবেক ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বলেছেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আল্লাহ ছাড়া কারও পরোয়া করে না। আমরা সঠিক পথে আছি বলেই আমাদের শত্রু বেশি, সমালোচনা বেশি এবং থামানোর চেষ্টাও বেশি।”

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় জেলার নাজিরপুর উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত এক কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার জামায়াত-শিবিরকে সবসময় কটাক্ষ করেছে, ঠিক একই পথে এখন বিএনপিও হাঁটছে। শুধু মালিকানা বদলেছে, তসবিহ একই আছে। দেশে কোনো ঘটনা ঘটলে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করা হয়। অথচ আমরা ন্যায়ের পথে আছি বলেই সফলতা দিন দিন বাড়ছে।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “খুনি হাসিনা আমাদের অভিভাবকদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে, ভাইদের গুলি করে মেরেছে। এত নির্যাতন-নিপীড়ন সত্ত্বেও আমাদের দমাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও কেউ পারবে না।”

দেশের সম্পদ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে মৎস্য, খনিজ, বনজ ও মানবসম্পদসহ কোনো কিছুর অভাব নেই। কিন্তু দুর্নীতির কারণে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের শুধু সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। আগামীতে সৎ, যোগ্য, দেশপ্রেমিক ও কোরআনপ্রেমী নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে দেশকে সঠিক পথে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”

ডাকসু নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “১০৪ বছরের ইতিহাসে ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে ছাত্রশিবির বিজয়ী হয়ে ইতিহাস রচনা করেছে। এটি তাদের আদর্শ, সততা ও আচরণের ফল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মন জয় করেই তারা এ সাফল্য অর্জন করেছে।”

আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মাসুদ সাঈদী বলেন, “পিরোজপুর-১, ২ ও ৩—এই তিন আসনে জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আমাদের বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবে না। কেউ আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না।”

তিনি বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, “১৯৭১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ীরা মাত্র ৩০-৩৫ ভাগ ভোট পেয়ে সংসদে বসে দেশ চালিয়েছে। অথচ ৬৫ ভাগ ভোটার কোনো মতামত দেওয়ার সুযোগ পায়নি। আমরা সব জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ চালাতে চাই। এজন্য আমরা পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। কিন্তু যারা জনগণের ভয় পায় তারাই এ পদ্ধতি মানতে চায় না।”

কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন শেখমাটিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি হাফেজ আব্দুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি মাওলানা জাকির হোসাইন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মজলিসুল মুফাসসিরিন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা সাংস্কৃতিক সম্পাদক অধ্যাপক জুয়েল মাহামুদ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী মোসালেহ্ উদ্দিন কাজীসহ জেলা ও উপজেলা জামায়াতের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।