দেশের ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ নাগরিক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপ কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বিআরএআইএন এবং ভয়েস ফর রিফর্ম।

রোববার সকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে এক গোলটেবিল আলোচনায় জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেন ইনোভেশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াৎ সারওয়ার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

জরিপে দেশের ১০ হাজার ৪১৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের অংশগ্রহণে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনি সংস্কার বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়।

জরিপের মূল ফলাফল

অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা: ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সরকারের কার্যক্রমকে ‘ভালো’ বা ‘মধ্যম মানের’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। তবে তরুণ, শিক্ষিত ও নগরবাসীদের মধ্যে সন্তুষ্টির হার তুলনামূলকভাবে কম।

নির্বাচন ও ভোট নিরাপত্তা: ৬৯ দশমিক ৯ শতাংশ নাগরিক মনে করেন সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ বিশ্বাস করেন তারা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন। তবে পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তরুণ ও নগরবাসীর সংশয় বেশি।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন গত ছয় মাসে চাঁদাবাজি বেড়েছে। নগর এলাকায় বসবাসকারী তরুণ ও উচ্চশিক্ষিতরা এ ধারণা বেশি দিয়েছেন। তরুণ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বড় অংশ তথ্যের প্রধান উৎস হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভর করেন।

নির্বাচনের সময়সূচি ও অংশগ্রহণ: ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ নাগরিক নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে এবং ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে শিক্ষার্থী, উচ্চশিক্ষিত এবং কিছু পেশাজীবীর মধ্যে সময়সূচি নিয়ে আপত্তি রয়েছে।

নির্বাচনি সংস্কার: সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে ৫৬ শতাংশ নাগরিক অবগত নন। তবে যারা অবগত, তাদের মধ্যে সমর্থনের হার বেশি। তরুণ ও উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তুলনামূলক বেশি।

গোলটেবিল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষক ড. সাইমুম পারভেজ, বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী এ কে এম ফাহিম মাশরুর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রশনা ইমাম এবং বিআরএআইএনের নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান।