প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়নে এক ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তোলপাড়। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্থানীয় সার্ভেয়ার কামাল হোসেন সন্তানকে কোলে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে নতুন স্ত্রীকে ঘরে তোলেন।
প্রেক্ষাপট: ভাঙনের পর নতুন জীবন
কামাল হোসেনের সংসার ভাঙন শুরু হয় প্রায় দেড় মাস আগে। স্ত্রী সাথী আক্তার দুই সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে চলে যান। পরে কামাল জানতে পারেন, স্ত্রী তাকে তিন মাস আগেই তালাক দিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি ভেঙে না পড়ে, উল্টো নতুন করে জীবন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।
আকাশপথে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন
শুক্রবার দুপুরে ছোট কন্যাকে কোলে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে তিনি রওনা দেন নতুন শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে। সেখানে বিয়ে সম্পন্ন করে নববধূকে নিয়ে ফেরেন নিজ গ্রামে। নবদম্পতির আগমনকে ঘিরে গ্রামের শত শত মানুষ ভিড় জমান হেলিকপ্টার দেখার জন্য।
স্বামীর প্রতিক্রিয়া
বিয়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কামাল হোসেন বলেন:
“পুরুষ নির্যাতনের কথা সমাজে খুব কমই উচ্চারিত হয়। আমার সংসারে কোনো অভাব ছিল না। তবুও স্ত্রী অন্যের সঙ্গে পালিয়ে যায়। আমি ভেঙে পড়িনি, বরং সিদ্ধান্ত নিয়েছি নতুনভাবে জীবন শুরু করার।”
তিনি আরও জানান, নতুন স্ত্রীর পরিবার সবকিছু জেনেই বিয়েতে রাজি হয়েছে। এমনকি সন্তানদের দায়িত্ব নিতেও আগ্রহী তারা। তাই নতুন জীবন শুরুর দিনে স্ত্রীকে চমকে দিতে হেলিকপ্টার ভাড়া করেন তিনি।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
হেলিকপ্টারে বরের আগমন স্থানীয়দের কাছে ছিল যেন সিনেমার দৃশ্য। অনেকেই বলেন, এ আয়োজন ছিল কৌতূহল ও আনন্দের এক অনন্য অভিজ্ঞতা। কেউ কেউ ঘটনাটিকে সাবেক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বার্তা দেওয়ার প্রতীকী উদ্যোগ হিসেবেও দেখছেন।
বাংলাদেশে বিয়েতে ব্যতিক্রমী আয়োজন নতুন কিছু নয়। তবে দাম্পত্য ভাঙনের শোক কাটিয়ে সন্তানের সঙ্গে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করার ঘটনা নিঃসন্দেহে বিরল। সমাজের চোখে এটি যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি অনেকের কাছে কঠিন পরিস্থিতি সামলে দাঁড়ানোর সাহসী প্রতীক হয়ে উঠেছেন কামাল হোসেন।