প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫
ভূমধ্যসাগর হয়ে ফিলিস্তিনের গাজার উদ্দেশে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা **‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’**র ১৩টি নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। এ ঘটনায় ৩৭ দেশের দুই শতাধিক অধিকারকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে দুইজন কলম্বিয়ান নাগরিকও রয়েছেন।
ঘটনার পর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বাতিল এবং ইসরায়েলি কূটনৈতিক দলকে কলম্বিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “যদি এই তথ্য সত্য হয়, তবে এটি নেতানিয়াহুর দ্বারা সংঘটিত একটি নতুন আন্তর্জাতিক অপরাধ।”
তিনি রাজনৈতিক দার্শনিক হান্নাহ আরেন্ডটকে উদ্ধৃত করে আরও লেখেন, “হিটলার বিশ্ব রাজনীতিতে এখনো বেঁচে আছেন; আরেন্ডট সঠিক বলেছিলেন।”
গ্রেটা থুনবার্গসহ বহু অধিকারকর্মী আটক
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাজা উপকূল থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে পৌঁছালে ইসরায়েলি বাহিনী নৌবহরের জাহাজগুলো আটক করা শুরু করে। বর্তমানে ১৩টি জাহাজ থামানো হয়েছে এবং সেগুলোর অধিকারকর্মীদের একটি ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।
এর আগে চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসেও গাজাগামী দুটি ত্রাণবাহী জাহাজ আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকে দেয় ইসরায়েল। তখনও থুনবার্গ ওই বহরের একটি নৌযানে ছিলেন।
কলম্বিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের কড়া সমালোচনা করে আসছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেত্রো। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে তিনি ইসরায়েলকে সরাসরি অভিযুক্ত করেন। এমনকি তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘গাজায় গণহত্যার সহযোগী’ আখ্যাও দেন। এ ছাড়া নিউইয়র্কে আয়োজিত একটি ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় তার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
মানবিক সংকটে গাজা
ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধ ভাঙতে ৪৬টি নৌযানে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। তাদের দাবি, গাজার অভুক্ত ও ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য। তবে ইসরায়েলের অভিযোগ, বহরটি হামাসের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে—যদিও এর পক্ষে কোনো প্রমাণ এখনো উপস্থাপন করতে পারেনি তারা।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অঞ্চলটিতে ভয়াবহ খাদ্য সংকট ও মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে।