যে পরিকল্পনাই করুক, এই মানবসমুদ্র ইসরায়েল থামাতে পারবে না: শহিদুল আলম

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

গাজার অবরোধ ভেঙে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন,
“ইসরায়েল যে পরিকল্পনাই করুক, এই মানবসমুদ্র থামাতে পারবে না। আমরা কনশানসের মানুষরা অবরোধ ভাঙতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা যদি আমাদের আটকায়, অন্যরা এগিয়ে আসবে। দমন–পীড়নকারী কখনোই জনগণের শক্তির বিরুদ্ধে টিকতে পারেনি। ইসরায়েলও ব্যর্থ হবে। মুক্ত হবে ফিলিস্তিন।”

শহিদুল আলম বর্তমানে ‘কনশানস’ (Conscience) নামের নৌযানটিতে অবস্থান করছেন, যা আন্তর্জাতিক মানবিক নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অংশ। এ বহরের লক্ষ্য ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভেঙে গাজায় মানবিক সহায়তা ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা।

একত্রে গাজামুখী নৌবহর

শহিদুল আলম জানান, কনশানস নৌযানটির গতি বেশি হওয়ায় এটি ইতোমধ্যে সামনে থাকা আটটি নৌযানকে ছুঁয়ে ফেলেছে। বর্তমানে নৌযানটির গতি কমিয়ে আনা হয়েছে, যাতে সব নৌযান একসঙ্গে গাজা অভিমুখে এগিয়ে যেতে পারে।
কনশানস হলো ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (TMTG) উদ্যোগের যৌথ অংশ। এই নৌবহরে কোনো খাদ্যসহায়তা না থাকলেও এটি একটি প্রতীকী আন্দোলন—ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জনমতের প্রতিধ্বনি।

‘হাজারো জাহাজ’ আন্দোলনের প্রতীক

শহিদুল আলম তার পোস্টে আরও লিখেছেন,
“থাউজেন্ড ম্যাডলিনস একটি অবিস্মরণীয় ধারণা। জাতিগত নিধন ঠেকাতে বিশ্বনেতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও কপট ভূমিকার কারণে বিশ্বের জনগণ নিজেরাই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাজারো জাহাজের ধারণাটি প্রতীকী হলেও, নিঃসন্দেহে এটি একসঙ্গে যাত্রা করা সবচেয়ে বড় সমুদ্রযান বহর।”

সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কনশানস জাহাজটিতে ২৫টি দেশের সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। সর্বশেষ এই মিশন শুরু হয়েছে গত বুধবার। ইসরায়েলের অবরোধ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাতের প্রতিবাদ জানিয়ে গাজা অভিমুখে রওনা হয়েছে তারা।

গত দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।

এক মানবিক প্রতিরোধের প্রতীক
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বিশ্বব্যাপী মানবিক প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠছে। শহিদুল আলম ও তার সহযাত্রীরা বিশ্বাস করেন, জনগণের এই শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধই অবরুদ্ধ গাজার মুক্তির পথে নতুন অধ্যায় রচনা করবে।

  • শেয়ার করুন