পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাদের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে আফগান সীমান্তরক্ষীরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির লড়াই শুরু হয়। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ব্যাপক হামলা চালায় বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

বিমান হামলা থেকে শুরু উত্তেজনার সূত্রপাত
ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দু-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে শুক্রবার রাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। ওই হামলার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) সংগঠনের প্রধান নেতা নূর ওয়ালী মেসুদ। বিমান হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে।

আফগান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই সীমান্তে পাল্টা অভিযান শুরু করেছে তারা। এক বিবৃতিতে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, “পূর্বাঞ্চলে তালেবান সীমান্তরক্ষীরা পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।”

সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার মতো পরিস্থিতি
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আফগান সেনাদের অসংখ্য সামরিক যান পাকিস্তান সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আফগান অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছে।

গত ১০ অক্টোবর আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান কাবুলের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং পাকতিকার মার্ঘা অঞ্চলের একটি বাজারে বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। ঘটনাটিকে ‘আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে নজিরবিহীন, সহিংস ও নিন্দনীয় কাজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

কাবুলে বিস্ফোরণ, রহস্য ঘিরে টিটিপি প্রধানকে লক্ষ্য করে হামলার দাবি
গত বৃহস্পতিবার রাতে কাবুলে বিকট বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, হামলাটি টিটিপি প্রধান নূর ওয়ালী মেসুদকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। তবে আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এ দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “টিটিপির প্রধান কাবুলে উপস্থিত ছিলেন না।”

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষ দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ককে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক মহল সীমান্তে সহিংসতা বন্ধে দুই পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।