গাজায় দুই বছরের যুদ্ধের অবসান ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

দীর্ঘ দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ঐতিহাসিক বন্দিবিনিময়ের পর গাজার যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটন সময় সকালে এক বিবৃতিতে তিনি এই ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্স।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এদিন হামাস জীবিত ইসরাইলি জিম্মিদের ইসরাইলের হাতে হস্তান্তর করে। পাশাপাশি মৃত জিম্মিদের মরদেহও ফেরত দেওয়া শুরু হয়েছে। অপরদিকে, ইসরাইলও বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়।

রেড ক্রসের তত্ত্বাবধানে গাজা থেকে ২০ জন জীবিত ইসরাইলি জিম্মিকে হস্তান্তরের পর ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বিষয়টি নিশ্চিত করে। তেল আবিবের ‘জিম্মি স্কয়ার’-এ অপেক্ষমাণ হাজারো মানুষের মধ্যে আনন্দ, আলিঙ্গন ও আবেগঘন দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, ইসরাইলি কারাগার থেকে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে বহনকারী বাস যখন গাজায় পৌঁছায়, তখন আত্মীয়স্বজনেরা আনন্দাশ্রু নিয়ে তাদের বরণ করে নেন।

একইদিন মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসে ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেট-এ ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আকাশ এখন শান্ত, বন্দুক নীরব, সাইরেন থেমে গেছে — অবশেষে পবিত্র ভূমিতে শান্তি ফিরে এসেছে।” ট্রাম্প আরও যোগ করেন, “এটি ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি উভয়ের জন্যই এক দীর্ঘ দুঃস্বপ্নের অবসান।”

নেসেটে ভাষণ শেষে বৃহত্তর আঞ্চলিক শান্তি ও গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে মিশরের শারম আল-শেখে আয়োজিত “শান্তি সম্মেলনে” যোগ দেন ট্রাম্প। বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল গাজায় টেকসই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা।

সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে ট্রাম্প মিশর, কাতার ও তুরস্কের নেতাদের সঙ্গে যৌথভাবে এক দলিলে স্বাক্ষর করেন এবং গাজা চুক্তিকে স্বাগত জানান। মিশরের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানায়, আলোচনায় গাজার প্রশাসন, নিরাপত্তা ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ট্রাম্প এই চুক্তিকে “সর্বকালের সেরা শান্তিচুক্তিগুলোর একটি” বলে অভিহিত করে বলেন, “এখন গাজা পুনর্গঠনের সময়।”

যদিও সম্মেলনে ইসরাইল ও হামাসের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না, এবং সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও এতে যোগ দেয়নি। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক করেন। ইসরাইলের আপত্তি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এই ঐতিহাসিক বন্দিবিনিময় ও শান্তিচুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা।

  • শেয়ার করুন