প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫
ঢাকা, শনিবার (১৮ অক্টোবর):
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শত শত টন আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের ৩১টি ইউনিট দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, এখনো ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হয়নি।
তবে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কবির আহমেদের হিসাবে, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ১৩ পয়সা হিসাবে হিসাব করলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১২ হাজার ২১৪ কোটি টাকা।
তিনি জানান, আগুনে কার্গো এক্সপ্রেস, ওয়্যারহাউজ, পণ্যবাহী বিমান এবং বিমানবন্দরের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে বিমানবন্দরের কার্গো কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। “শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, দেশের সামগ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থাও বড় ধরনের ধাক্কা খাবে,” বলেন তিনি।
কার্গো ভিলেজ মূলত আমদানি ও রপ্তানির জন্য অপেক্ষমাণ পণ্য সংরক্ষণের কেন্দ্র। আমদানিকারক বা তাদের প্রতিনিধিরা শুল্কায়ন শেষে এখান থেকে পণ্য খালাস করেন। তৈরি পোশাক, শাকসবজি, ফলমূলসহ বিভিন্ন পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এখান থেকে পাঠানো হয়।
আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল বলেন, “অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য এই আগুনে পুড়ে গেছে। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার পরই প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। বিমা দাবির প্রক্রিয়া শুরু করতেও সময় লাগবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ দেশের আমদানি-রপ্তানির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এখানে শুল্ক বিভাগ, বিমান সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে। আগুনে শুধু পণ্যই নয়, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় চালুর আগে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে হবে।
বাণিজ্য খাতের সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, এই অগ্নিকাণ্ডে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে এবং রপ্তানি পণ্যের লিড টাইমে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।