প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২৫
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি │
নির্বাচন কমিশন (ইসি) যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়, তাহলে রাজপথে নেমে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, “শাপলাকে নির্বাচনি প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই। অথচ নির্বাচন কমিশন তা দিচ্ছে না। তাদের যদি এই স্বাধীনতাটুকুও না থাকে, তাহলে নির্বাচনে তাদের ওপর আস্থা রাখার সুযোগ নেই।”
রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ২টায় কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, “শাপলা প্রতীক পাওয়ার দাবিতে যদি এনসিপিকে রাজপথে নামতে হয়, তাহলে একইসঙ্গে আমরা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতেও আন্দোলনে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না থাকায় এনসিপি এখনই এতে স্বাক্ষর করছে না। যেদিন বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা মিলবে, সেদিনই জনগণের পক্ষ থেকে এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে।”
আওয়ামী লীগ, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা, মৌলিক সংস্কার ও বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিএনপি বা জামায়াত এককভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর মতে, “এই প্রক্রিয়ায় এনসিপির অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা অপরিহার্য।”
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সভার কার্যক্রম শুরু হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খান। সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা সংগঠক ইকরাম হোসেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির ও দিদার শাহসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সারজিস আলম বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে আমরা দেশের প্রতিটি জেলায় সফর করছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব জেলা কমিটি, আর ডিসেম্বরের মধ্যে উপজেলায় কমিটি গঠন সম্পন্ন হবে।”
প্রশাসনে রাজনৈতিক প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রশাসনের সব স্তরে বড় দলের প্রভাব রয়ে গেছে। ওসি, এসপি থেকে শুরু করে বিচার বিভাগের কেউ কেউ রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তার করছেন। আমাদের আন্দোলনে যারা গুলি চালিয়েছিল, তারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আঁতাত করে আদালত থেকে জামিন পাচ্ছে। এসব বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের বিরোধীদের এনসিপিতে স্থান দেওয়া হবে না, বরং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এনসিপি কয়েকটি আসনের বিনিময়ে কোনো জোটে যোগ দেবে না। শুধু সেই দলগুলোর সঙ্গেই ঐক্য হবে, যারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা এবং আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
এনসিপির সমন্বয় সভা উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।