প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলতি মাসের শুরুতে ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। তবে মাদারীপুর-১ আসনের ঘোষিত প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত হওয়ায় এখনো ৬৪ আসন ফাঁকা রয়েছে। দলীয় সূত্র বলছে, নভেম্বরের মধ্যেই বাকি আসনগুলোতে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
সমঝোতার কারণে বিলম্ব
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দলগুলোর জন্য কিছু আসন ছাড়ার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পাশাপাশি একাধিক প্রভাবশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকায় কয়েকটি আসন নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমীকরণ জটিল হয়ে উঠেছে। তবুও দলটির শীর্ষ পর্যায় মনে করছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
তারা আরও জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ধরে আসন সমঝোতা ও প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে নির্বাচন নির্বিঘ্ন করার জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি।
মিত্রদের চাপ বাড়ছে
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর অভিযোগ, বিএনপি তাদের প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত না করায় মাঠে নেমে প্রচার চালাতে পারছেন না। অন্যদিকে একই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রতিনিয়ত কর্মসূচি পালন করায় বিভ্রান্তি এবং অস্বস্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “বিএনপি প্রাথমিকভাবে সবুজ সংকেত দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। এতে নির্বাচনি এলাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। দ্রুত মিত্রদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ প্রয়োজন।”
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা সাইফুল হক অভিযোগ করেন, আসন সমঝোতায় বিএনপি কালক্ষেপণ করছে। তার ভাষায়, “পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, মিত্রদের সঙ্গে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। সমঝোতা না হলে বিকল্প চিন্তার প্রয়োজন হতে পারে।”
বিএনপির জবাব: সমঝোতা চূড়ান্ত পর্যায়ে
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “চলতি মাসের মধ্যেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারব। মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, আরপিও সংশোধন না হলে নিবন্ধিত শরিকদের নিজেদের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে।
বিরোধপূর্ণ আসনে পুনর্মূল্যায়ন
ঘোষিত প্রার্থী তালিকার পর প্রায় ২৩ আসনে মনোনয়নবঞ্চিতদের বিক্ষোভ দেখা দেয়। কিছু নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভাগীয় ও স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছে হাইকমান্ড। প্রার্থীদের মাঠ পর্যায়ের অবস্থান নিরীক্ষা করতে নিরপেক্ষ সংস্থার সহায়তায় যাচাই চলছে।
দলীয় সূত্র বলছে, যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে কয়েকটি আসনে ঘোষিত প্রার্থীর পরিবর্তন আসতে পারে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, মনোনীত ও বঞ্চিত নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে এবং বাকি আসনগুলোতেও দ্রুত প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
আগামীদিনের প্রেক্ষাপট
বিএনপির সিনিয়র নেতারা আশা করছেন, বিরোধপূর্ণ আসনগুলোতে দ্রুত সমাধান হবে এবং দলীয় ও মিত্র প্রার্থীরা একসঙ্গে কাজ করে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করবেন।