প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫
প্রকাশিত:
কলকাতা/নয়াদিল্লি/ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ — গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত থেকে দ্রুত অন্য দেশে আশ্রয় নিতে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সূত্র।
রায়ের পরপরই তিনি কলকাতার রোজডেলে এলাকা ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে যান। ফলে কয়েকদিন ধরে কলকাতায় অবস্থানরত তার রাজনৈতিক দলের কোনো নেতাকর্মী বা ঘনিষ্ঠজন তার সাক্ষাৎ পায়নি।
বার্তা সংস্থা ও কূটনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তি নেই—এমন কোনও দেশে আশ্রয় নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন সাবেক এই মন্ত্রী। নিজেও ভারত ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, “ভারতে বেশিদিন থাকা নিরাপদ মনে করছি না, এখনই বিকল্প চিন্তা করতে হচ্ছে।”
গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীসহ তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার রায় দেন। এরপর বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত চেয়ে ভারতের সরকারের কাছে নোট ভারবাল পাঠায়, যা বর্তমানে পর্যালোচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারত সরকার।
১৯ নভেম্বর ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও প্রত্যর্পণের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর মধ্যেই সামনে আসে সাবেক মন্ত্রীর ভারত ছাড়ার প্রচেষ্টার তথ্য।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, দেশটির কোনও বন্দর বা বৈধ রুট ব্যবহার করে সীমান্ত অতিক্রমের তথ্য পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাবেক মন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে তাকে “ঢাকার কসাই” হিসেবে মন্তব্য করেন এবং বলেন, প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়ার সূচনা হবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে। ফেসবুক পোস্টে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে জানান, দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ও অভিযুক্তদের বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।
সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ভারত সরকারের জবাবের অপেক্ষায় আছি, আশা করছি তিনি অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ সরকার জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকেই নিরস্ত্র মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িতরা পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাদের প্রত্যর্পণ ও দণ্ড কার্যকর অপরিহার্য বলেও পুনরায় উল্লেখ করা হয়।
— অনলাইন সংবাদ পোর্টাল