বাবরি মসজিদের জন্য নগদ অর্থের পাহাড়!

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ নির্মাণকে ঘিরে বিপুল অনুদানের ফলে তৈরি হয়েছে কার্যত নগদ অর্থের পাহাড়। ট্রাঙ্কভর্তি নগদ অর্থ এনে ঘরের মাঝখানে ঢেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলছে অর্থ গণনার কর্মযজ্ঞ। চারদিকে বসে থাকা মানুষেরা একটানা নোটগুলো গুনছেন। এই বিপুল অর্থ গোনার জন্য আনা হয়েছে আধুনিক মেশিনও।

জানা গেছে, মোট ১১টি ট্রাঙ্ক ভর্তি নগদ রুপি এসেছে অনুদান হিসেবে। এগুলো গোনার জন্য ৩০ জন কর্মীকে নিয়োগ করাও হয়েছে। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে হুমায়ুন কবীরের বাড়িতেই চলছে এই বিশাল অর্থ গণনার কাজ।
এই বিপুল অঙ্কের অনুদান জমা পড়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’-র অধীনে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত যত নগদ অর্থ জমা পড়ে, তা আলেম-উলামাদের উপস্থিতিতে গণনা শুরু হয়। রাত ১২টার পরও চলতে থাকে গণনার কাজ। সেই সময় পর্যন্ত ৭টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়, যেখান থেকে মেলে ৩৭ লাখ রুপি। পুরো অর্থ গণনার প্রক্রিয়া চলছে সিসিটিভির কড়া নজরদারিতে।

হুমায়ুন কবীর জানান, বাবরি মসজিদ নির্মাণ শুরু হওয়ার আগেই তার জনপ্রিয়তা এই বিপুল অনুদানেই স্পষ্ট। তিনি আরও দাবি করেন, শুধুমাত্র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন কিউআর কোড স্ক্যান করেই জমা পড়েছে ৯৩ লাখ রুপি। এছাড়া মসজিদ নির্মাণের জন্য দুইদিনে দান হিসেবে জমা পড়েছে অন্তত ১৫ লাখ ইট।

এর আগে ৬ ডিসেম্বর শনিবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন মুর্শিদাবাদে আবারও বাবরি মসজিদের নির্মাণের জন্য শিলান্যাস করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। নিজে হাতে ইট নিয়ে সেখানে হাজিরও হয়েছিলেন তিনি। নির্মাণস্থলে উপস্থিত থেকে তিনি জানিয়েছিলেন, বাবরি মসজিদ তৈরি করতে খরচ হবে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা।

তবে টাকা নিয়ে চিন্তা করছেন না হুমায়ুন, কারণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তিই নাকি ৮০ কোটি টাকা অনুদান দেবেন বাবরি মসজিদ তৈরির জন্য। আরও বহু মানুষ টাকা দিচ্ছেন। হুমায়ুন দাবি করেছেন, মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বীরভূম ও মালদহ থেকে বাবরি মসজিদ তৈরির প্রস্তাব এসেছে। রামপুরহাট, সিউড়ি থেকে কিছু লোক এসে অনুরোধ করেছেন। বীরভূম ও মালদহতে বাবরি মসজিদের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য যে আপাতত টাকার অভাব হবে না, তা এই বিপুল জমা অর্থ দেখেই স্পষ্ট। তবে এই বিপুল অর্থ, প্রকাশ্যে ট্রাঙ্কভর্তি এই অর্থ গণনার দৃশ্য সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। একদিকে সাধারণ মানুষের একাংশ হুমায়ুন কবীরের স্বচ্ছতা প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানালেও, অন্যদিকে বিরোধীরা অনুদানের উৎস, হিসাব এবং আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।

  • শেয়ার করুন