প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫
বিজয় দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পাকিস্তানের পতাকা আঁকার পর তার পাশেই এবার ভারতের পতাকা এঁকেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে ভারতের পতাকা আঁকেন জবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের বিজয়কে নিজেদের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কুক্ষিগত করার পাঁয়তারা করছে। যার প্রতিবাদে এই উদ্যোগ।
এর আগে, বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১টায় জবির প্রধান ফটকের সামনে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা শুরু করে শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রঅধিকারের কতিপয় নেতাকর্মী। এ সময় তারা ক্যাম্পাসের ফটক দিয়ে শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস বের হতে বাধা দেয়। এ সময় প্রথমে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের বাধা দেন। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা, হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা রাতভর প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে তারা উপাচার্যের গাড়ি অবরোধ করেন। ভোর ৫টার দিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অবরোধ তুলে নিলে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান উপাচার্যসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, জুলাইয়ের পর আমরা মনে করেছিলাম, ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের গণহত্যা ও আমাদের মা-বোনের ওপর অত্যাচারের প্রতীকী প্রতিবাদের জন্য একজনের উপর বাংলাদেশ বিরোধী কিছু দালাল হামলা করেছে। জবিতে কোনো স্বৈরাচার কিংবা মবতন্ত্রের আত্মপ্রকাশ করতে পারবে না। ছাত্রদল বাংলাদেশের জন্য ঘুমায় না। সবার আগে বাংলাদেশ।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, বিজয়ের মাসে প্রতীকী প্রতিবাদে পাকিস্তানের পতাকা আঁকতে গেলে প্রথমে প্রক্টরিয়াল বডি বাধা দেয়। পরে আস-সুন্নাহ হলের কিছু শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এ সময় সাংবাদিকদের ওপরও হামলা করা হয়।
তিনি বলেন, ১৯৭১-এর গণহত্যায় কিছু পাকিস্তানি সমর্থকরা সমর্থন দিয়েছিল। তাদের প্রেতাত্মারা এখনো বাংলাদেশে রয়েছে। পাকিস্তানকে হেয় করলে তাদের অন্তরে জ্বালা করে। সে জায়গা থেকে পাকিস্তানি পতাকা এঁকে প্রতীকী প্রতিবাদে তারা বাধা দিয়েছে।
জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পতাকা আঁকতে গেলে অনুমতি প্রয়োজন। তারা অনুমতি না নিয়েই পতাকা অঙ্কন করেন। শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস ক্যাম্পাস থেকে বের হতে বাধা দেয়।