প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলাদেশের নেতারা যদি ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিতে থাকেন, তাহলে ভারত বেশিদিন নীরব থাকবে না বলে সতর্ক করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, গত এক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে বারবার এমন বক্তব্য আসছে, যেখানে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এমন চিন্তাই বাংলাদেশের জন্য ভুল। এটা একটি খারাপ মানসিকতার পরিচয়।’
আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি বড় দেশ, একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি। তার ভাষায়, ‘আমাদের সাহায্য নেওয়ার পাশাপাশি যদি কেউ ভারতের বিরুদ্ধে এমন আচরণ করে, তাহলে আমরা চুপ করে থাকব না।’ তার এই প্রতিক্রিয়া আসে এক দিন আগে বাংলাদেশের সদ্য গঠিত ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের পর। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ভারতের আটটি রাজ্য নিয়ে গঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘ভারত যদি আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার মানে না এমন লোকদের আশ্রয় দেয়, তাহলে আমরাও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় দেব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিচ্ছিন্ন করে দেব।’
হাসনাত আবদুল্লাহ ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে ভারত। তবে এমন বক্তব্য এই প্রথম নয়। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রে যাওয়ার কোনো পথ তাদের নেই। আমরা সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।’
পরবর্তীতে বাংলাদেশি নেতাদের বক্তব্যে ভারতের ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডোরের কথাও উঠে আসে, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ রক্ষা করে।
এ প্রসঙ্গে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ভারতকে হুমকি দেওয়ার আগে বাংলাদেশের নিজের দুটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ চিকেনস নেক’ নিয়ে ভাবা উচিত। তিনি বলেন, একটি করিডোর পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটারজুড়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে গেছে। আরেকটি হলো প্রায় ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম করিডোর, যা দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।