আমর ভাই আমারে ছাইরে চলে গেছে: সুদানে শহীদ শামীমের ভাই

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

আমার বড় ভাই শামীম আমাকে বলতো- ভাই তুই চিন্তা করিস না, আমি তোর সাথে আছি। আমার ভাই এখন আমারে ছেড়ে চলে গেল। এখন আমরা কি নিয়ে থাকবো। ভাই তুই একটা বার ফিরে আয় না, তোর পা-টা ধরে মাফটা চেয়ে নিই ভাই, তুই আমারে মাপ করে দিস ভাই। ভাই আমি তোকে একটা বার বলতে পারিনি, আমি তোকে অনেক ভালোবাসি ভাই।’

রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জানাজায় যাওয়ার সময় এভাবেই কান্নাজড়িড কণ্ঠে বড় ভাইয়ের কথা মনে করেছিলেন সুদানে শহীদ সেনা সদস্য শামীম রেজার মেজো ভাই সোহেল রানা। তিনি সৌদি প্রবাসী। বড় ভাইয়ের মরদেহ দেশে আশার কথা শুনে তিন দিন আগে বাড়িতে এসেছেন।

জানা গেছে, রোববার দুপুর পৌনে ২টায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে শহীদ শামীম রেজার মরদেহ ঢাকা থেকে কালুখালীর মিনি স্টেডিয়ামে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে মরদেহটি তার গ্রামের বাড়িতে ২টা ১০মিনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় কান্না আর আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

শামীম রেজার মরদেহ বাড়িতে আসার কথা শুনে সকাল থেকেই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে আসতে শুরু করেন। দুপুরে মরদেহ বাড়ির সামনে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। শামীমের বাবা, মা, স্ত্রী, বোন ও ভাইয়েরা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। শেষ বারের মতো শামীমের মরদেহ দেখতে তার প্রতিবেশী ও সহপাঠীরাও এসেছেন।

জায়গা সংকলনের কারণে মরদেহটি বাড়িতে না নামিয়ে জানাজাস্থলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রথমে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ শামীম রেজার জীবনী পাঠ করা হয়। এরপর তার স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। নীরবতা পালন শেষে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মরণোত্তর সালাম দেওয়া হয়।

  • শেয়ার করুন