রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখলে সংশ্লিষ্ট দেশের পণ্যের ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থিত এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের অর্থনীতি ও শেয়ার বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি মার্কিন সিনেটে একটি বিল পেশ করা হয়েছে, যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া দেশগুলোর ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিলটি প্রস্তাব করেছেন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, যিনি এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, যদি কোনো দেশ রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করে এবং একই সঙ্গে ইউক্রেনকে সাহায্য না করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
গ্রাহাম বলেন, ভারত ও চীন পুতিনের রপ্তানি হওয়া তেলের প্রায় ৭০ শতাংশ কিনছে, যা রাশিয়ার যুদ্ধ মেশিন চালু রাখছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবিত বিলের মাধ্যমে এসব দেশকে চাপ প্রয়োগ করতেই শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন শুরুতে বিলের ভাষা কিছুটা নমনীয় করার পরামর্শ দিয়েছিল, যেমন “হবে” (shall) এর বদলে “হতে পারে” (may) ব্যবহার, যাতে বিলটি বাধ্যতামূলক না হয়ে সিদ্ধান্তমূলক থাকে।
এই বিল আগস্টে সিনেটে উত্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং বর্তমানে ৮৪ জন সিনেটর এটি সমর্থন করছেন। বিলটি পাস হলে, ভারতের উপর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে, কারণ ভারতের রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমাগত বাড়ছে।
উল্লেখ্য, ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মহামারী-পূর্ব সময়ের ১০.১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক বেশি। এই প্রবৃদ্ধির মূল কারণ হলো রাশিয়া থেকে ভারতীয় আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি, বিশেষ করে অপরিশোধিত তেল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্য।
উভয় দেশ আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্ভাব্য শুল্ক নীতির কারণে সেই লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে।