25 C
Khulna
Tuesday, July 8, 2025

চীন থেকে জে-১০সি যুদ্ধবিমান কিনছে ইরান: রিপোর্ট

ইরানের বিমান বাহিনীকে আধুনিক ও শক্তিশালী করতে চীন থেকে চেংডু জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করছে তেহরান। ইতোমধ্যে এ নিয়ে চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা জোরদার করেছে দেশটি। সম্প্রতি মস্কো টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে ইরান শক্ত প্রতিরোধ গড়লেও, যুদ্ধের সময় তাদের বিমান বাহিনীর দুর্বলতা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণেই নতুন ও উন্নত যুদ্ধবিমান সংগ্রহের দিকে ঝুঁকছে তেহরান।

এর আগে ইরান রাশিয়ার এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করলেও শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। এবার দেশটি নজর দিয়েছে চীনের তৈরি চেংডু জে-১০সি বিমানের দিকে, যা প্রযুক্তি, কার্যকারিতা ও মূল্য—সব দিক থেকে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী।

জানা গেছে, ইরান বহুদিন ধরেই জে-১০সি কেনার আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। ২০১৫ সালে ১৫০টি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য আলোচনা শুরু হলেও সেই চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ বেইজিং চেয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন, আর ইরান চেয়েছিল তেল ও গ্যাসের বিনিময়ে পেমেন্ট করতে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাও ছিল বড় বাধা।

২০২০ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর আবারও আলোচনা শুরু হয়, তবে তখন বিমানসংখ্যা কমিয়ে ৩৬টি করা হয়। তবু অর্থ পরিশোধের পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে চুক্তি সেবারও চূড়ান্ত হয়নি।

তবে পরিস্থিতি এবার বদলেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ইরানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তেল কেনার অনুমতি দিয়েছে। একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিও সই হয়েছে। এতে করে চীনের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধবিমান চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা বেড়েছে।

এই প্রেক্ষাপটেই গত ২৪ জুন ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পরদিনই চীনে যান ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ। যদিও তাঁর সফরের উদ্দেশ্য ছিল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে অংশগ্রহণ, তবে তিনি চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান পরিদর্শনও করেন। সেই সফরের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ইরান সত্যিই জে-১০সি সংগ্রহ করে, তবে তা হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎ সংঘাতে ইরানের জন্য একটি কার্যকর অস্ত্র। কারণ ইসরাইল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা এফ-৩৫, এফ-২২ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইরানের অভ্যন্তরে গভীর হামলা চালাতে সক্ষম, যা প্রতিহত করতে ইরানের বিমান বাহিনী স্পষ্টভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও তেহরান দাবি করেছে, তারা বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি বিমান ভূপাতিত করেছে।

তবুও, ইরানের সামরিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ছাড়া ভবিষ্যতে নিজেদের আকাশসীমা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। সেই শূন্যতা পূরণেই চীনের সঙ্গে যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনায় গতি এনেছে তেহরান।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ