বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় লাল ব্যাজ ধারণ নিয়ে কে প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে মতবিরোধ। তবে আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে এবং সৃষ্টি করে ব্যাপক আলোড়ন।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন দাবি করেছেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির-ই সবার আগে লাল ব্যাজ ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোফাইল লাল করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বুধবার (৯ জুলাই) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিএনপি এনালাইসিস সেলের একটি পোস্ট শেয়ার করে ইশরাক লিখেন, “লাল ব্যাজ ও প্রোফাইল লাল করার প্রস্তাব সবার আগে দিয়েছিলেন ছাত্রদলের সেক্রেটারি নাছির।”
পোস্টে সংযুক্ত ভিডিওতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “গত বছরের ২৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে কালো ব্যাজ ধারণের সরকারি নির্দেশনার পর বিকেলে নাছির ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়। তখন তিনি কালোর বিপরীতে লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাব দেন।”
তিনি আরও জানান, এরপর বিষয়টি ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব হোসাইন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক কায়েমকে জানানো হয়। সাদিক ফোনে প্রস্তাবটি শুনে সম্মতি দেন বলে দাবি করেন কাদের।
আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে কাদের বলেন, “প্রতিদিনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করার আগে আমরা—আমি, মাসউদ, রিফাত, মাহিন—একসঙ্গে বসতাম। ওইদিন রিফাত প্রস্তাব দিয়েছিল চোখে-মুখে কালো কাপড় বাঁধার। তখন আমি জানাই, নাছির ভাই লাল কাপড়ের কথা বলেছেন। পরে মাহিনও তাতে সম্মতি জানায়।”
পরবর্তী আলোচনায় সাদিক কায়েম ও নাছির উদ্দীনের সঙ্গে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এরপর চোখে-মুখে লাল কাপড় বাঁধা এবং ফেসবুক প্রোফাইল লাল করার কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে সচেতনতা তৈরিতে হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের কথাও জানান সাদিক।
তবে বিষয়টিতে ভিন্ন দাবি করেছেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সভাপতি এস এম ফরহাদ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাব প্রথম আমি দিই এবং আমরা তা লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আন্দোলন সমন্বয়কদের কাছে পাঠাই।”
কার প্রস্তাবে লাল ব্যাজ ধারণের বিষয়টি শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে মতানৈক্য থাকলেও—ছাত্রদল, শিবির এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে এ কর্মসূচি জাতীয়ভাবে আলোচিত ও বিস্তৃত আন্দোলনে পরিণত হয়।