কোনো ধরনের বিচার ও শাস্তি ছাড়াই ৩০ বছর ধরে কারাগারে বন্দি ছিলেন হবিগঞ্জের কানু মিয়া (৫০)। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মাকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৫ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু দুই দশক আগেই মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকলেও, তার মুক্তি হয়নি। পরিবার-পরিজনের স্মৃতি থেকে মুছে যাওয়া এক মানুষের পাশে অবশেষে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র।
সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলা কারাগার পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি নজরে আনেন জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন। পরে বাদীপক্ষকে খুঁজে বের করে, সরকারি আইনগত সহায়তার মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ।
১৪ জুলাই, হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর ১৫ জুলাই দুপুরে কানু মিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কানু মিয়া লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামের বাসিন্দা। ১৯৯৫ সালের ২৫ মে রাতে ঘুমের ঘোরে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেন তিনি। গ্রামবাসী তাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এরপর থেকে তার জীবন আটকে যায় কারাগারের চার দেয়ালে। পরিবারও ধীরে ধীরে তাকে ভুলে যায়। কেউ জানতেও পারেনি, তিনি এখনো বেঁচে আছেন।
চাচাতো ভাই মোহন মিয়া বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম সে মারা গেছে। আজ জানতে পারলাম সে কারাগারে ছিল এবং এখন মুক্ত।”
ত্রিশ বছরের নিঃসঙ্গ বন্দি জীবনের অবসান ঘটল এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগে। যাকে সবাই ভুলে গিয়েছিল, তাকে মনে রেখেছে রাষ্ট্র।