প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫
ক্যালিফোর্নিয়ার এক নারী মেসোথেলিওমায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকম পাউডার দায়ী বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এ মামলায় লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি জুরি সোমবার কোম্পানিটিকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ৯৬৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।
মৃত নারী মে মুর ২০২১ সালে মেসোথেলিওমা নামক বিরল ও আক্রমণাত্মক ক্যান্সারে মারা যান। তার পরিবারের অভিযোগ, বহু বছর ধরে জনসনের বেবি পাউডার ব্যবহার করার ফলে তিনি এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, কারণ এতে অ্যাসবেস্টস নামক ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান মিশ্রিত ছিল। আদালতের রায়ে কোম্পানিটিকে ১৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ ও ৯৫০ মিলিয়ন ডলার শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
জনসন অ্যান্ড জনসনের লিটিগেশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক হাস এক বিবৃতিতে জানান, কোম্পানি অবিলম্বে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তিনি এ রায়কে “চূড়ান্তভাবে ভুল এবং অসাংবিধানিক” বলে অভিহিত করেছেন।
কোম্পানিটি সবসময় দাবি করে আসছে যে তাদের ট্যালকম পাউডারে অ্যাসবেস্টস নেই এবং এটি ক্যান্সার সৃষ্টি করে না। তবে টানা হাজার হাজার মামলার পর ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী বেবি পাউডার বিক্রি বন্ধ করে দেয়।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে একটি ফেডারেল আদালত জনসন অ্যান্ড জনসনের ৯ বিলিয়ন ডলারের দেউলিয়া পরিকল্পনা বাতিল করে, যার মাধ্যমে তারা চলমান ও ভবিষ্যতের সব মামলা নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিল। আদালত জানায়, কোম্পানির প্রক্রিয়াটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং অভিযোগকারীদের যথাযথ সম্মতি নেয়া হয়নি। এটি ছিল টানা তৃতীয়বার, যখন দেউলিয়া ব্যবস্থার মাধ্যমে মামলা এড়ানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো।
২০২১ সালে জনসন অ্যান্ড জনসন একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এলটিএল ম্যানেজমেন্ট তৈরি করে দেউলিয়া ঘোষণার উদ্যোগ নেয়, যা অভিযোগকারীরা “টেক্সাস টু-স্টেপ” কৌশল বলে আখ্যা দেন। পরবর্তীতে আদালত রায় দেন যে কোম্পানি দেউলিয়া আইন ব্যবহার করে দায় এড়াতে পারবে না।
বর্তমানে ৯০ হাজারেরও বেশি মামলা চলমান রয়েছে। কোম্পানি জানিয়েছে, তারা আবারও প্রচলিত বিচার প্রক্রিয়ায় ফিরে গিয়ে এসব “নিরর্থক দাবি” মোকাবিলা করবে এবং ইতিমধ্যে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার সংরক্ষণ করেছে। এদিকে অভ্যন্তরীণ নথি থেকে জানা গেছে, বহু বছর ধরেই কোম্পানির অভ্যন্তরে ট্যালকে অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছিল।
👉 এই রায় জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ট্যালক পাউডার-সংক্রান্ত মামলাগুলোর মধ্যে একটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।