খুলনা বিভাগে এক বছরে ৬১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৬১৩ – আহত ৬১৪

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫

  • শেয়ার করুন

সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি যশোরে

২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬১৬টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬১৩ জন এবং আহত হয়েছেন ৬১৪ জন। দুর্ঘটনায় ৮৯২টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টভাবে।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে যশোর জেলায়। সেখানে ১০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১০৭ জন।

জেলার ভিত্তিতে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান

খুলনা: ৩৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩, আহত ৩৮

বাগেরহাট: ৪৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৫, আহত ৫৮

সাতক্ষীরা: ৩৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫০, আহত ৪৩

যশোর: ১০৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ১০৪, আহত ১০৭

নড়াইল: ২৫টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩০, আহত ৪২

মাগুরা: ৪৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮, আহত ৪২

ঝিনাইদহ: ৮৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৮৩, আহত ৪৪

কুষ্টিয়া: ১০৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ১০০, আহত ১০৪

চুয়াডাঙ্গা: ৮৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৬০, আহত ৭৪

মেহেরপুর: ৪৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭, আহত ৬৫

বিআরটিএ’র খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, “আইন প্রয়োগে ঘাটতি, চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব এবং যানবাহনের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে তিন চাকার যানবাহন যেমন নসিমন, করিমন, অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশার বেপরোয়া চলাচল দুর্ঘটনার বড় অংশীদার।”

দুর্ঘটনার কারণ

সড়ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে—

আইন প্রয়োগ ও সমন্বয়ের অভাব,

অদক্ষ ও মাদকাসক্ত চালক,

ফিটনেসবিহীন যানবাহন,

প্রতিযোগিতামূলক ওভারটেকিং,

মহাসড়কে ছোট যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল,

প্রকৌশলগত ত্রুটি ও বিপজ্জনক বাঁক।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “প্রতিদিনই সড়কে প্রাণ ঝরছে। চালকদের বেপরোয়া আচরণ, আইনের প্রয়োগের ঘাটতি ও সড়ক ব্যবস্থাপনার বিশৃঙ্খলা দুর্ঘটনার মূল কারণ। প্রকৌশলগত ত্রুটি ঠিক করা এবং নজরদারি বাড়ানো গেলে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।”

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার উপদেষ্টা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সামিউল হক বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ সবাই জানে, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই। সরকার, প্রশাসন, চালক, মালিক, শ্রমিক ও যাত্রী—সবাইকে সমন্বিতভাবে সচেতন হতে হবে। তাহলেই সড়ক দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।”

👉 খুলনা বিভাগের সাম্প্রতিক এই পরিসংখ্যান আবারও মনে করিয়ে দেয়, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

  • শেয়ার করুন