প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে নারীর ওপর চলমান ও অতীতের সহিংসতার বিরুদ্ধে এখনো কার্যকর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ধর্মের নামে রাজনীতির ব্যবসা যারা করে, যারা জান্নাতের টিকেট বিক্রি করে ভোটের বৈতরণী পার হতে চায়, তাদের হাতেই নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে।”
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান: প্রতিরোধে প্রস্তুত সচেতন নারী সমাজ’ শীর্ষক মৌন মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে মুখে কালো কাপড় বেঁধে শাহবাগ থেকে নারীরা মৌন মিছিল বের করেন, যা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমান। পরিচালনা করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন শিরীন সুলতানা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সানজিদা ইসলাম তুলি, রেহানা আক্তার শিরীনসহ অনেকে।
“আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে ধর্ষকরা বেরিয়ে যায়”
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কিছু ঘটনায় আইন কঠোর করা হলেও এর সঠিক প্রয়োগ না থাকায় নারী নির্যাতনকারীরা适ఫাঁকফোকর গলিয়ে মুক্ত হয়ে যায়। একই সঙ্গে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শক্ত আইনের অপব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অন্যায় করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নারীর কর্মঘণ্টা কমানোর প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনা
তাঁর অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান সংকুচিত করতে চাইছে।
তিনি বলেন, “কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারীদের চাকরির সুযোগ কমে যাবে। অফিস-আদালত ও শিল্পকারখানার মালিকেরা তখন নারী কর্মী নিয়োগে অনীহা দেখাবেন। এতে নারীর অগ্রগতি ব্যাহত হবে।”
সমাবেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন—নারীরা কি কর্মসংস্থান কমে যাওয়া চান? উপস্থিত নারীরা সমস্বরে ‘না’ বলে জবাব দেন।
রাজশাহীতে দুই নারী নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা
রাজশাহীর কাটাখালীতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ধানের শীষের পক্ষের দুই নারী কর্মীর ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী নারীদের জুতা পেটা করেছে, যা নারীর প্রতি চরম অবমাননা।
তাছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মত প্রকাশের জেরে মামলা দায়েরের ঘটনাকেও তিনি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন।
সমঅধিকারভিত্তিক সমাজ গঠনের অঙ্গীকার
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
“আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ধর্ম, বর্ণ, ভাষাভেদে কোনো বিভাজন থাকবে না। সংবিধান অনুযায়ী সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে। নারী-পুরুষ উভয়ের সমান অংশগ্রহণে উন্নত দেশ গড়ে উঠবে।”
তিনি জানান, বিএনপি ৩১ দফার ভিত্তিতে নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।