খুলনা, ৩০ জুন: প্রতিদিন খুলনা,
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা এবং চলমান জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন—চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেল এবং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তনয় রায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মো. রাসেল ধারাবাহিকভাবে জুলাই অভ্যুত্থান ও এতে জড়িত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটাক্ষমূলক পোস্ট দিয়ে আসছেন। তিনি আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ছাত্রদের ‘লাল গেঞ্জি’ নামে কটাক্ষ করে ব্যঙ্গ করেন।
এছাড়াও রাসেল বিভিন্ন সময়ে ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ বিধিবিধান, আল্লাহ সম্পর্কে বর্ণবাদী মন্তব্য, কুরআনের আয়াত নিয়ে অবমাননাকর ভাষ্য, ইবাদত এবং আলেম সমাজকে কটাক্ষ করে একাধিক পোস্ট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি সম্প্রতি ইসলাম ধর্মের ফরজ বিধান ‘জিহাদ’ নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন।
রাসেলের মতোই একই ধরনের আচরণ করেছেন তার জুনিয়র, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তনয় রায়। তিনিও ইসলাম ধর্মের ফরজ বিধান নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
এ প্রসঙ্গে ফিজিক্স ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তালহা মাহমুদ বলেন, “মো. রাসেল দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম, মুসলিম এবং জুলাই আন্দোলনের ছাত্রদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে আসছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি, তদন্ত করে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান মুন্সি বলেন, “রাসেল শুধু ধর্মীয় অবমাননা নয়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছে এবং বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে অপপ্রচারে যুক্ত থেকেছে। আমি চাই, প্রশাসন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান বলেন, “আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। কেউ যদি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করে, তাহলে তা বরদাশত করা যায় না। রাসেল ও তনয় যা করেছে, তা অপরাধ।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং প্রশাসনকে জানিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিক্ষার্থীদের দাবি, মো. রাসেল নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। তার বিভিন্ন পোস্ট, মন্তব্য এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি প্রকাশ্য হুমকি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।