28.5 C
Khulna
Sunday, July 13, 2025

চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি, পরিণতিতে সোহাগ খুন: উঠছে ইসহাকের নাম

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও পাথর মেরে হত্যার পেছনে চাঁদাবাজির দ্বন্দ্ব জড়িত বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা ইসহাক ওই এলাকায় চাঁদার নিয়ন্ত্রণ নেন এবং মাসিক ৬ লাখ টাকা তুলতেন। সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ১২ লাখ নির্ধারণ করে মাহমুদুল হাসান মহিনকে দায়িত্ব দেন। এ সিদ্ধান্ত জানার পর সোহাগ প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা হামিদের গ্রুপে যুক্ত হতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয়ে ইসহাক তার বিরুদ্ধে হত্যার ছক কষেন।

বুধবার সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম পরদিন কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্থানীয় চাঁদাবাজদের নামসহ ২০ জনের বেশি পরিচয় জানা এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়।

গ্রেফতার ও রিমান্ডে ৪ আসামি
পুলিশ ও র‌্যাব এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। আদালত মহিনের পাঁচদিন এবং রবিনের দুইদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তার
আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের বিভিন্ন অস্থায়ী চাকরি, ওষুধ ব্যবসা ও ফুটপাত নিয়ন্ত্রণের নামে চাঁদা আদায় করে আসছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সোহাগের সঙ্গে ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব ছিল।

সিসিটিভিতে নৃশংসতা ধরা পড়েছে
ফুটেজে দেখা যায়, সোহাগকে হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে হত্যাকারীরা উল্লাস করে এবং তার শরীরে বারবার আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও তার দেহের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন ভয়ে নীরব ছিলেন।

দলীয় ব্যবস্থা ও প্রতিক্রিয়া
ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে যুবদলের রজ্জব আলী পিন্টু ও সাবাহ করিম লাকিকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, অপরাধীদের প্রতি দলের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণসংহতি আন্দোলন পৃথক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে।

সাংগঠনিক পরিচয়
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন যুবদল নেতা টিটু, ছাত্রদল নেতা অপু, হাসপাতালের আউটসোর্স কর্মী মনির ও অ্যাম্বুলেন্স চালক নান্নু। তাদের বিরুদ্ধে আরও নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক নিন্দা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা, জগন্নাথ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ