26.7 C
Khulna
Monday, July 14, 2025

খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুবুর হত্যায় জড়িতরা সিসি ক্যামেরায় ধরা

দৌলতপুরে মাহাবুবুর রহমান হত্যাকাণ্ড: সিসিটিভি দেখে শনাক্ত দুর্বৃত্ত, গ্রেপ্তার সজল রিমান্ডে

খুলনার দৌলতপুর থানার বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মাহাবুবুর রহমান মোল্লাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই ফুটেজ ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবির ভিত্তিতে স্থানীয়রা দাবি করছেন, চরমপন্থি নেতা হুমার সহযোগীরাই এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছে। নিরাপত্তা দিতে আশপাশে আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, হত্যায় জড়িত সন্দেহে শনিবার গভীর রাতে মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে সজল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সজল কাছ থেকে দুর্বৃত্তদের তথ্য দিতেন, যা হত্যাকাণ্ড সফল করতে সহায়তা করেছে।

হত্যার আগে থেকেই মাহাবুবুর ও চরমপন্থিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত জুনের শেষ দিকে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পায় আসিফ, রায়হান ও ইমন নামে তিনজন। তাঁরা অস্ত্র মামলায় আট মাস ধরে জেল খাটছিলেন। জামিনে বেরিয়েই তারা মাহাবুবুর ও তাঁর বন্ধু জাকিরের বাড়িতে গিয়ে ভবন দখল নিয়ে হুমকি দেয়। এছাড়া, মাদক ব্যবসা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পুলিশের কাছে তথ্য দেওয়ার বিষয় নিয়েও মাহাবুবুরের সঙ্গে হুমা গ্রুপের দ্বন্দ্ব তীব্র হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১১ জুলাই দুপুরে মাহাবুবুর নিজ বাড়ির সামনে গাড়ি পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা তিন যুবক তাঁকে গুলি করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর পায়ের রগ কেটে দেয়। হত্যাকারীরা একটি মোটরসাইকেলে করেই পালিয়ে যায়। মোটরসাইকেলে বসা তিনজনের মধ্যে একজনের মাথায় হেলমেট ছিল।

ঘটনার সময় আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফুটেজ দেখে স্থানীয়রা মোটরসাইকেলে থাকা আসামিদের চিহ্নিত করেন। জানা গেছে, চালক ছিলেন রায়হান, মাঝের জন ছিলেন আসিফ। পেছনে থাকা যুবক বিভিন্ন ফুটেজে ভিন্নজন, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে হত্যায় মূল তিনজন ছাড়াও আশপাশে আরও কয়েকজন সহায়তায় ছিল।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৯ অক্টোবর বাগেরহাটের রামপালে চরমপন্থি নেতা বড় শাহীনকে হত্যা করতে গিয়ে হুমায়ুন কবির হুমা, রায়হান, আসিফ ও ইমনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছিল। সেসময় আরেক চরমপন্থি আরমানের তথ্যেই তাঁরা ধরা পড়েন। উল্লেখ্য, আরমান মাহাবুবুরের খালাতো ভাই।

স্থানীয়দের মতে, আট মাস জেল খাটা এই তিনজন জামিনে ছাড়া পেলেও বাড়িতে খুব একটা থাকতেন না। তারা একাধিক হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় ফেরারি অবস্থায় ছিলেন। অপরদিকে, যুবদল নেতা ও প্রভাবশালী খালাতো ভাইয়ের সূত্রে মাহাবুবুর এলাকার জমি ব্যবসা, মাদক সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন। এতে উঠতি সন্ত্রাসী ও হুমা গ্রুপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।

দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী জানিয়েছেন, হত্যার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যাদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ