গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনার পরও শুরু হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত সমাবেশ। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে শহরের পৌর পার্ক এলাকায় সমাবেশস্থলে পৌঁছান দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলাম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা. তাসনিম জারা ও অন্যান্য নেতারা। স্থানীয় নেতাকর্মীরা ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানে তাদের স্বাগত জানান।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে সমাবেশের প্রস্তুতির সময় পৌর পার্কের উন্মুক্ত মঞ্চে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ ৫০–৬০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে মঞ্চে ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় মঞ্চে থাকা এনসিপি নেতারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলার সময় কেউ আহত হয়েছেন কি না, তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। হামলাকারীরা সরে যাওয়ার পর নেতা-কর্মীরা পুনরায় মঞ্চে ফিরে আসেন এবং সমাবেশ আবার শুরু হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এনসিপির নেতারাও সরাসরি হামলার বিষয়ে কিছু বলেননি।
এদিকে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় গোপালগঞ্জজুড়ে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান সদর থানার ওসি মীর সাজেদুর রহমান।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িবহরে হামলা হয়। ইউএনও এম রাকিবুল হাসান জানান, গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপে সাইড গ্লাস ভেঙে গেছে এবং চালক হালিম আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের কাঠি বাজার এলাকায় সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পিয়ালের নেতৃত্বে সড়কে কাঠে আগুন দিয়ে অবরোধের চেষ্টা করা হয়। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাই এসব হামলা ও অবরোধে অংশ নিয়েছেন। তবে দলটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গতকাল থেকেই এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে গোপালগঞ্জে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজকের হামলা ও সহিংসতার মধ্যেও সমাবেশ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে এনসিপি নেতারা।