27.4 C
Khulna
Sunday, July 13, 2025

ইসরায়েলে নেতানিয়াহু সরকারের পতনের ডাক

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু—এমন অভিযোগ করেছেন ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়াইর গোলান। শনিবার (১৩ জুলাই) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এ নেতা বলেন, “জীবন রক্ষার চেয়ে নেতানিয়াহুর কাছে তার ক্ষমতা রক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

গোলান আরও বলেন, নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর অনুসন্ধান প্রমাণ করেছে যে, নেতানিয়াহু, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে বন্দি মুক্তি চুক্তি বানচাল করছেন। তাদেরকে তিনি “চরমপন্থী সংখ্যালঘু” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “এই সরকার গোটা দেশকে নরকে ঠেলে দিচ্ছে।”

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন: রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর সাম্প্রতিক অনুসন্ধানেও উঠে এসেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু রাজনৈতিক কারণে এসবকে উপেক্ষা করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার সিদ্ধান্ত ছিল একটি কৌশল, যাতে তিনি এবং ডানপন্থী মন্ত্রীরা নিজেদের জোট ও জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেন।

বন্দি মুক্তির দাবিতে উত্তাল তেল আবিব

শনিবার রাতে তেল আবিবে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবিতে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেন। “বন্দিদের ছাড়া কোনো বিজয় নয়” এবং “গাজায় ৫০টি পরিবার এখনো বন্দি”—এই স্লোগান লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে তারা রাস্তায় নেমে আসেন। চ্যানেল ১৩-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব বিক্ষোভ নেতানিয়াহু সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

বন্দিদের পরিবারের একটি ফোরাম সরকারকে দ্রুত চুক্তি সম্পাদন ও যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “প্রতিদিন বিলম্ব মানেই আমাদের বন্দি ও সেনাদের জন্য বিপদ বাড়ানো।”

হামাসের প্রস্তাব ও আলোচনার অচলাবস্থা

গত বুধবার হামাস জানায়, তারা অন্তত ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। তবে ইসরায়েল এখনো কয়েকটি মূল ইস্যুতে অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে, রাফাহ সীমান্তে ২-৩ কিলোমিটার চওড়া বাফার জোন এবং অন্যান্য সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এলাকা নির্ধারণ। এই বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়ায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতির পথ রুদ্ধ হয়ে আছে।

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা চ্যানেল ১৩-কে জানিয়েছেন, আলোচনা ভেঙে পড়েনি এবং দোহায় এখনো পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা।

আন্তর্জাতিক চাপ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, খাদ্য সংকট এবং রোগব্যাধিতে পুরো অঞ্চল বিপর্যস্ত।

২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার মামলা এখনো চলমান।

- Advertisement -spot_img

More articles

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ